ডিজিটাল বাজারের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা বজায় রাখার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের দুটি প্রধান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান—আইফোন ও কম্পিউটার প্রস্তুতকারক অ্যাপলকে ৫০০ মিলিয়ন ইউরো এবং ফেসবুকের মূল সংস্থা মেটাকে ২০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান শুল্ক সংক্রান্ত উত্তেজনার মধ্যেই ইইউ এই কঠোর অবস্থান গ্রহণ করল।
২৪ এপ্রিল, ২০২৫ বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে জানায় যে, ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ) আইন লঙ্ঘনের দায়ে এই দুটি বৃহৎ মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়েছে। এই আইনের অধীনে এটাই প্রথম কোনো জরিমানা আরোপের ঘটনা এবং ইইউ-এর এই সিদ্ধান্ত ইউরোপের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রধান শিরোনামে উঠে এসেছে।
ইউরোপীয় কমিশনের একজন মুখপাত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, এই জরিমানার মূল উদ্দেশ্য হলো ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিযোগিতার সুরক্ষা এবং ইউরোপে বসবাসকারী ভোক্তাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখা। অ্যাপলকে তাদের অ্যাপ স্টোরের কঠিন নিয়ম-কানুন আরোপের জন্য শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে, মেটা তাদের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাপের সাবস্ক্রিপশন মডেল চালুর মাধ্যমে তথ্য সুরক্ষা এবং ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতার নীতি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রণীত ডিএমএ আইনে বৃহৎ ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে তাদের প্ল্যাটফর্মগুলো অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মের জন্য উন্মুক্ত রাখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এই আইন লঙ্ঘিত হলে ব্রাসেলস সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বার্ষিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করার ক্ষমতা রাখে। ইতোমধ্যেই মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ইইউর এই আইনগুলোকে ‘অন্যায্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারটিনোতে অবস্থিত অ্যাপলের প্রধান কার্যালয় জানিয়েছে যে তারা ইইউর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবে। মেটাও ইইউর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে যে, ইউরোপীয় কমিশন তাদের ওপর বহু বিলিয়ন ইউরোর শুল্ক আরোপ করে তাদের ব্যবসায়িক মডেল পরিবর্তনে বাধ্য করছে।
আরও দেখুন