ভারতের আহমেদাবাদে ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনায় ২২৯ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ মডেলের বিমানটি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ভূপাতিত হয়ে আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় দুই পাইলট, কেবিন ক্রু ও যাত্রীসহ সবাই নিহত হলেও অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান একমাত্র যাত্রী, ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ ভারতীয় ব্যবসায়ী বিষ্ণু কুমার রমেশ।
বিষ্ণু রমেশ জানান, দুর্ঘটনার সময় তিনি বিমানের ১১এ নম্বর আসনে ছিলেন, যা ইকোনমি ক্লাসের প্রথম সারি ও বিজনেস ক্লাসের পেছনের দিকে অবস্থিত। তার আসনটি বিমানের বাম পাশে ইমার্জেন্সি এক্সিটের কাছে ছিল। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছিল আমি মারা যাচ্ছি। চোখ খুলে দেখি বেঁচে আছি। নিজেই সিটবেল্ট খুলে বের হয়ে এসেছি, কিন্তু আমার সামনে থাকা যাত্রীরা আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।”
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত বিমানের পেছনের আসনগুলোকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে করা হলেও এই ঘটনায় সেই ধারণা প্রযোজ্য হয়নি। বিমান বিশ্লেষক অঙ্গদ সিং একে ‘অলৌকিক ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, “১১এ আসনটি নিরাপদ বিবেচনায় পড়ে না, তা সত্ত্বেও একজন যাত্রীর বেঁচে যাওয়া ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া কিছু নয়।”
আরও পড়ুন
ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মিচেল ফক্স বলেন, প্রতিটি বিমান দুর্ঘটনা আলাদা, এবং একজন যাত্রীর বেঁচে থাকা নির্ভর করে বিমানের কাঠামো, আগুন লাগার স্থান, ফুয়েল ট্যাংকের অবস্থানসহ নানা বিষয়ের ওপর। একারণে নির্দিষ্টভাবে কোনো সিটকে সর্বদা নিরাপদ বলা যায় না।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে তদন্তকারীরা। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সূত্রে জানা গেছে, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই পাইলট ‘মেডে’ সংকেত পাঠান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উড়োজাহাজটির দুই ইঞ্জিনে চাপ কমে যাওয়া বা বার্ড হিটের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনার পর ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে কাজ করছে।