কুমিল্লায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে তোলা ছবি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরামুল হাসান প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে তোলা ছবি ফেসবুকে আপলোড করলে এ সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের কক্ষে এ ছবি তোলার ঘটনাটি ঘটে। ছবিটি ভাইরাল হয় পরদিন বৃহস্পতিবার।
এর আগে বুধবার দুপুরের দেবিদ্দার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে পদত্যাগ দাবি করে। এই সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে স্লোগান দিতে থাকে এবং প্রধান শিক্ষককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।
এরপর ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইকরামুল হাসান প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে ছবি তুলে তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করে। মুহূর্তের মধ্যে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতেই শুরু হয় উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড়।
ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকের টেবিলের ওপর থাকা নেমপ্লেট সামনে রেখে চেয়ারে বসে আছে ইকরামুল। ওই সময় তার পরনে স্কুল ড্রেস ছিল না। এছাড়া ছবিতে তাকে ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি।
ইকরামুলের এমন কাণ্ড নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনায় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ইকরামুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস থেকে বের হওয়ার পর তারই ছাত্র চেয়ারে বসে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেয়ার যে ক্ষমাহীন ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এদিকে ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার মুখে নিজের ফেসবুক থেকে ছবিটি সরিয়ে ফেলে ইকরামুল হাসান। সেই সঙ্গে এমন ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে ইকরামুল তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি পোস্ট করে।
পোস্টে ইকরামুল লেখে, ‘আমি আলমগীর স্যারের পদত্যাগের দিন রাতের বেলা পরিদর্শন করতে যাই এবং স্যারের চেয়ারে বসে একটি ছবি তুলি আর ছবিটি আবেগের বসে স্টোরিতে আপলোড দেই যা আমার একটি বেয়াদবি। এইটা আমার ভুল হয়েছে আমি তা স্বীকার করি। এর জন্য আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমাকে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ইকরামুল আরও লেখে, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এমন ভুল আমার আর দ্বিতীয়বার হবে না, শিক্ষকদের প্রতি চিরকাল সম্মান ছিল এবং থাকবে। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত, কাজটি আমি না বুঝে করেছি, যখন বড় ভাইরা আমায় এ বিষয় নিয়ে বোঝায় তখন আমি বুঝতে পারি, কত বড় ভুল আমি করেছি। মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয় আমার প্রাণের বিদ্যাপীঠ। আমি ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ের মান সম্মান ক্ষুণ্ন হয় এমন সব কাছ থেকে দূরে থাকবো।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post