কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন রূপ নিয়েছে সরকার পতনের একদফায়। এ অবস্থায় আবারও ভয়াবহ সংঘাত-সহিংসতা শুরু হয়। রক্তাক্ত লাশের মিছিলে ভয়াবহ একটি দিন পার করেছে গোটা বাংলাদেশ। পুরো দেশ যেনো এক টুকরা যুদ্ধের ময়দান হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল রোববার (৪ আগস্ট)।
সোমবার (৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে পুরো ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে নগরী। কোথাও পড়ে আছে ভাঙ্গা ইট, বাঁশ, আবার কোথাও ভাঙ্গা কাঁচ কোথাও আগুনে ভস্মীভূত হওয়া গাড়ি, কোথাও আগুনের স্তুপ।
এ পরিস্থিতিতে রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। আজ সোমবার থেকে তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে কারফিউ প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে সোমবার ‘মার্চ টু ঢাকা’ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রোববার বিকেলে ফেসবুকে নিজের আইডিতে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক পোস্টে কারফিউ প্রত্যাখ্যান করে লংমার্চ টু ঢাকা সোমবার (৫ আগস্ট) এ কর্মসূচি পালন হবে বলে জানান।
অন্যদিকে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে এ দিন মাঠে থাকবেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
এদিকে এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি থেকে জঙ্গি কায়দায় হামলা, সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন সন্ত্রাসী ঘটনা এবং নৈরাজ্য থামাতে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। নৈরাজ্য দমন করতে হুঁশিয়ারি দিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. আরাফাত বলেছেন, সরকার কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা দেখতে চায় না। জান-মালের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত শনিবার এক দফা দাবিতে সরকার পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়। দাবি আদায়ের লক্ষ্য হিসেবে আন্দোলনকারীরা দেশব্যাপী অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা, হামলা ও সংঘর্ষে পুলিশের ১৪ সদস্যসহ প্রাণ গেছে ১০৬ জনের এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জুলাই মাসে দেড়শ’র বেশি প্রাণহানির তথ্য জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অন্যদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যমতে এ সংখ্যা আড়াইশোর বেশি।
এত বেশি প্রাণহানি এবং রক্ত স্বাধীনতার পর আর দেখেনি বাংলাদেশ। এ অবস্থায় সোমবার (৫ আগস্ট) কারফিউ প্রত্যাখ্যান করে লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে আরও অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে প্রত্যেকের মনে আতঙ্ক কী হতে যাচ্ছে আজ ঢাকায়
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post