আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে আলোচিত হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক। কোন কোন ব্যক্তি রাজনৈতিক স্বার্থে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করলেও দেশটিতে এক অনন্য নজির স্থাপন করে শান্তির বার্তা দিয়েছেন দুই মুসলিম যুবক। জম্মু-কাশ্মীরের রেয়াসি জেলায় ৫০০ বছরের পুরনো মন্দিরে যাওয়ার জন্য রাস্তা তৈরিতে জমি দান করেছেন ওই দুই মুসলিম যুবক।
জানা গেছে, রেয়াসি জেলার খেরাল পঞ্চায়েতের গোলাম রসুল ও গোলাম মোহাম্মদ নামের ওই দুই ব্যক্তি ৫০০ বছরের পুরোনো মন্দিরের রাস্তা নির্মাণের জন্য তাদের চার কানাল জমি দান করেন। এই জমির বাজার মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি রুপির (১ কোটি ৪০ লাখ টাকার) বেশি।
এদিকে, লোকসভা ভোটে আসন জেতার জন্য মরিয়া হয়ে এক শ্রেণির নেতা যখন ভারতে ধর্মীয় মেরুকরণ করতে চাইছেন ঠিক তখনই সম্প্রীতির এই অনন্য নজির স্থাপন করেছেন ওই দুই মুসলিম যুবক।
এসময় রেয়াসির জেলা প্রশাসক বিশেষ পাল মহাজন বলেন, ‘এইভাবে সমাজকে সম্পূর্ণ সম্প্রীতির দিকে পরিচালনার নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। জমির বিষয়ে আমি বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। মন্দিরের রাস্তা নির্মাণ নিশ্চিত করতে প্রশাসন অর্থ সরবরাহ করবে।’
এদিকে একজন রাজস্ব কর্মকর্তা জানান, ‘রাজস্ব বিভাগের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা ও রেকর্ডে এন্ট্রি করার পর কান্সি পাট্টা গ্রামে গুপ্ত কাশী-গৌরী শঙ্কর মন্দিরের জন্য ১০ ফুট চওড়া ১২০০ মিটার রাস্তা তৈরি করা হবে।’
জানা গেছে, গোলাম রসুল পঞ্চায়েতের সাবেক সদস্য। তিনি বলেন, কিছু ব্যক্তি রাস্তা তৈরির জেরে সমস্যা বা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছিল। আমরা ভেবে দেখলাম মন্দিরে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। যদি আমাদের জমি দান করি তবে রাস্তাটি তৈরি করা যায় এবং এতে তীর্থযাত্রীদের উপকারই হবে।’
এরপর যেই চিন্তা সেই কাজ রসুল ও মোহাম্মদ রাজস্ব কর্মকর্তাদের কাছে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে এ নিয়ে একটি সভা ডাকা হলে তারা উভয়েই রাস্তার জন্য জমি দান করার বিষয়ে সম্মত প্রকাশ করেন।
এদিকে, মন্দিরটিকে সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ মুসলিম সম্প্রদায়ের ওই দুই ব্যক্তির দানসহ অত্র এলাকায় আরো কিছু জমি পেয়েছেন। সব মিলিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির স্থাপিত হয়েছে কাশ্মীরের এই ছোট্ট গ্রামটিতে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post