সারাদেশে শুরু হয়েছে গরমের দাপট। ঘর থেকে বের হলেই চারপাশ থেকে গরম বাতাস ও রোদের উত্তাপে শরীর যেন পুড়ে যায় অবস্থা। দরদর করে ঝরছে ঘাম। অতিরিক্ত তাপে কোথাও কোথাও গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচ, রোদের তাপে ভাজা যাচ্ছে ডিম! সূর্যের তাপের এমন তীব্রতা এখন মরুভূমি নয়, চুয়াডাঙ্গাতেই সম্প্রতি এমন অবস্থার নজির মিলেছে।
তীব্র গরমে নাজেহাল দেশের প্রতিটি স্থান। সবচেয়ে জটিল পরিস্থিতি যেন চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে সূর্যের তাপ এতটাই যে খোলা ছাদে কোনো প্রকার চুলা ছাড়াই ভাজা যাচ্ছে ডিম।
চুয়াডাঙ্গার বেশিরভাগ এলাকাতেই পিচ ঢালা পথ যানবাহনের ঘষায় গলতে শুরু করেছে। এলাকাবাসী কাজ কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হলেই তাদের ত্বক পুড়ে যাচ্ছে। তীব্র জ্বালাপোড়াসহ কালোভাব ছড়িয়ে পড়ছে সারা শরীরে।
সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সূর্যের দাপট চলছে এখানে। ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি ঘর ছোঁয়া চুয়াডাঙ্গায় গরমের তীব্রতা প্রভাব ফেলেছে ব্যবসায় খাতগুলোতেও।
অলিগলির রাস্তায় তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে বেড়েছে শরবত ও ঠান্ডা পানীয়ের অসংখ্য দোকান। এদিকে দিনমজুরে খেটে খাওয়া মানুষ অসহনীয় তাপের কারণে হঠাৎই হচ্ছেন হিট স্ট্রোকের শিকার।
গতকাল শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জাকির হোসেন নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত জাকির দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেন ছেলে। তিনি পেশায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন।
নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, ‘রোদ গরমে মাঠের ধান মরার অবস্থা। ধানের জমিতে সেচ (পানি) দেয়ার জন্য জাকির সকাল ৭টার দিকে মাঠে যায়। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই সে মাঠে স্ট্রোক করেছে। মাঠে থাকা অন্য কৃষকরা তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে খবর নিয়ে জানা গেল, হিট স্ট্রোক এবং গরমজনিত নানা রোগের শিকার হয়েই হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
চুয়াডাঙ্গায় বেশি তাপমাত্রার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্কটক্রান্তি রেখার কারণেই এখানে তীব্র গরম অনুভূত হয়। মার্চ মাস থেকেই এ রেখায় সূর্য একটু বেশি ঝুঁকে থাকতে শুরু করে।
যে কারণে চুয়াডাঙ্গায় গ্রীষ্মকালে গরম বেড়ে যায়। আন্তর্জাতিক এ রেখা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে যাওয়ায় শুধু গ্রীষ্মকালেই এখানে তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হয় না, শীতকালেও সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভব করেন স্থানীয়রা।
গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক কিসিন্জার চাকমা বলছেন, গরমজনিত যেকোনো রোগ থেকে দূরে থাকতে দেশবাসীকে সচেতন ও সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি গাছ লাগানোর পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post