ইরান একরকম গোটা বিশ্বকেই চমকে দিয়েছে। নিজেদের অপ্রতিরোধ্য ভাবা ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে তেহরান। নজিরবিহীন এই হামলার পর ক্ষোভে ফুঁসছে ইসরায়েল। তবে হুট করেই তারা পাল্টা হামলা চালাতে পারছে না। কারণ, সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে করা ভুলের মাশুল পৌঁছে গেছে তাদের দোড়গড়ায়।
এবার পাল্টা আঘাত করলে তার জবাব কী হতে পারে সে নিয়ে বেশ সংশয়ে আছে ইসরায়েল। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একরকম ঘোষণা দিয়েই রেখেছেন, নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাই নেবে ইসরায়েল।
তাতে পশ্চিমাদের বাধার তোয়াক্কা করবেন না সেই ঘোষণাও ইসরায়েলি নেতা একরকম দিয়েই রেখেছেন।এবার ইসরায়েল ইরানে কোন পন্থায় হামলা চালাতে পারে সে নিয়ে নানা পূর্বাভাস দিচ্ছেন সমরবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমত, ইরানে হামলার জন্য আকাশ পথে বেছে নিতে পারে ইসরায়েল। করতে পারে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষার তুলনায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা বেশ দুর্বলই বলা যায়। এক্ষেত্রে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ঘাঁটি কিংবা পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রসহ ইরানের কৌশলগত অবস্থানগুলো সম্ভাব্য ইসরাইলি বিমান হামলার লক্ষ্য হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ইরানের সামরিক স্থাপনাও হতে পারে ইসরায়েলের লক্ষ্য। ইসরায়েলের সম্ভাব্য সরাসরি বিমান বা সাইবার হামলার লক্ষ্য হতে পারে ইরানের সামরিক স্থাপনা বা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গবেষণা বিভাগের সাবেক প্রধান সিমা শাইনের মতে, বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে ইরানি ভূখণ্ডে হামলার একটি কৌশল হতে পারে এটি।
তৃতীয়ত, সাইবার হামলাও করতে পারে ইসরায়েল। ইরানের সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন ওয়েবসাইট আক্রান্ত হওয়া, দেশটির কয়েকজন পারমাণু বিজ্ঞানী গুপ্ত হত্যা এবং বিভিন্ন সময় গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই। যদিও ইহুদী রাষ্ট্রটি এসব অভিযোগ কখনই স্বীকার করেনি। ধারণা করা হয়, ইরানের পেট্রোল পাম্প থেকে শুরু করে অনেক শিল্প কারখানা এবং পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিভিন্ন সময় সাইবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এখন ইরানের হামলার জবাবে আবারও একই পথে হাঁটতে পারে দেশটি।
চতুর্থত, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সহযোগীদের ওপর আক্রমণ করতে পারে ইসরায়েল। ইরানে সরাসরি হামলার বদলে লেবাননের হিজবুল্লাহ কিংবা ইয়েমেনর হুতিদের ওপর আঘাত হানতে পারে ইসরায়েলি বাহিনী। ইরাক ও সিরিয়াতেও কয়েকটি সশস্ত্র দল রয়েছে, ইসরায়েলে হামলা করতে ইরান দলগুলোকে সহায়তা দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসবের বাইরে গিয়েও গাজায় বেশি নজর দিতে পারে ইসরায়েল। দেশটির ধারণা রাফাহতে হামাসের প্রায় ৮ হাজার যোদ্ধা এখনো লুকিয়ে আছে। তাদের মতে, ইরানের কাছ থেকে অর্থায়ন ও সামরিক প্রশিক্ষণ পাওয়া হামাসের পরাজয় ইসরায়েলের কাছে বড় ধরনের একটি বিজয় হতে পারে।
আর এসব পথে না গিয়ে পুরনো কৌশলেও হাঁটতে পারে ইরান। তারা নামতে পারে গোপন অভিযানে। ইসরায়েল আগেও বিভিন্ন সময় ইরানি ভূখণ্ডে অনেকবারই গোপন অভিযান পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে দেশটির কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীির গুপ্ত হত্যাও রয়েছে বলে মনে করা হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post