বিমান টিকিট বিক্রির নামে প্রতারণা চালাচ্ছিল একটি চক্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন– বেল্লাল হোসেন, লিটন মিয়া ও রিয়াজ শেখ।
বৃহস্পতিবার(১৪ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রটি ফেসবুকে কম দামে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিত। এর পর টাকা নিয়ে সরবরাহ করত জাল টিকিট। ডিবি বরাত থেকে জানা , চক্রের মূলহোতা লিটন নিজেই প্রতারিত হওয়ার পর প্রতারণা শুরু করেন।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কুয়েতপ্রবাসী মজনু মিয়া গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর স্বজন হুমায়ুন কবিরকে জানান, মে মাসে বাংলাদেশে আসবেন। কুয়েত থেকে বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার টিকিটের দাম বেশি পড়ায় তিনি বাংলাদেশ থেকে টিকিট কিনতে বলেন। হুমায়ুন অনলাইনে সানফ্লাওয়ার ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালের খোঁজ পান। সেখানে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্টে (হ্রাসকৃত মূল্যে) টিকিট বিক্রির ঘোষণা ছিল। ফেসবুকে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা টিকিট দিতে পারবে বলে জানায়।
এর পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় লিটন মিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। নগদ ৫ হাজার টাকা ও পাসপোর্টের ফটোকপি দেন। বাকি ৪৭ হাজার টাকা লিটনের ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দেন। টাকা পাওয়ার পর চক্রটি মজনু মিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বিমান টিকিটের কপি পাঠায়। তবে যাচাই করে দেখা যায় টিকিটটি জাল। তখন লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে মজনু মিয়াকে ব্লক করে দেন।
ডিবিপ্রধান জানান, চতুর্থ শ্রেণি পাস লিটন ২০১২ সালে কুয়েতে গিয়ে গাড়িচালকের কাজ করতেন। পরে সে দেশে ফিরে তার কিছু বন্ধুদের নিয়ে ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ করতে থাকেন। এর মধ্যে একজন বিদেশে চলে যায়। এর পর তিনি রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতারণা করতে শুরু করেন। প্রথমে ফেসবুকে সানফ্লাওয়ার ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি পেজ খুলে লিটন সেখানে ১৫ শতাংশ ছাড়ে বিমানের টিকিট বিক্রির পোস্ট দেন।
চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রবাসীরা আকৃষ্ট হয়ে ফেসবুকে দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর, মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন। এই প্রবাসীদের মধ্যে টার্গেট বাছাই করে ছাড়ে টিকিট বিক্রির টোপ ফেলতেন লিটন।
তিনি জানান, রাজধানীর সিটি সেন্টারে তাঁর অফিস। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য ব্যাংকে টাকা দিতে বলতেন। তাঁর অবর্তমানে টিকিটপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলতেন রিয়াজ। গত কয়েক মাসে আনুমানিক ৪ লাখ মানুষের সাথে কথা বলে এই প্রতারণার টোপ ফেলেছে। প্রতি মাসে লিটন আয় করত প্রায় তিন লাখ টাকারও বেশি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post