বর্তমানে বাংলাদেশে ঠিক কতজন বিদেশি নাগরিক অবস্থান করছেন তা নির্ণয় করা কঠিন কারণ সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই। বেসরকারি সংস্থাগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে দেশে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ বিদেশি নাগরিক অবস্থান করছেন। তবে এই সংখ্যা সঠিক কিনা তা নিশ্চিত করে বলা অসম্ভব। যাদের বেশিরভাগ ভারতীয় নাগরিক।
বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানরত বৈধ বিদেশি নাগরিকদের সংখ্যা ১ লাখ ৭ হাজার ১৬৭ জন।
বৈধ নাগরিকদের দেশভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, দেশে অবস্থানরত বৈধ নাগরিকদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিক ৩৭ হাজার ৪৬৪ জন, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। ভারতের পরে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন। দেশে চীনা নাগরিকের সংখ্যা ১১ হাজার ৪০৪ জন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ভিসায় রয়েছেন ১০ হাজার ৪৮৫ জন, ইমপ্লয়ি ভিসায় ১৪ হাজার ৩৯৯ জন, স্টাডি ভিসায় ৬ হাজার ৮২৭ জন এবং ট্যুরিস্ট ভিসায় রয়েছেন ৭৫ হাজার ৪৫৬ জন।
বৈধ বিদেশি নাগরিকের হিসাব থাকলেও দেশে অবৈধ বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা অনেক বলে নানা সময়ে তথ্য উঠে এসেছে। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, আয়কর ফাঁকি দিয়ে অনেক বিদেশি নাগরিক এ-থ্রি ভিসা, বি-ভিসা কিংবা ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা এক প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজে এসে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছেন।
২০০৬ সালে প্রণীত ভিসা নীতিমালায় কর্মানুমতি গ্রহণের শর্ত না থাকায় অনেকে আবার কর্মানুমতি না নিয়ে কিংবা ভিসার মেয়াদ না থাকায় বা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বছরের পর বছর কাজ করে মাত্র ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে দেশ ত্যাগ করছেন।
ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনেক বিদেশি নাগরিক অবাধে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। সেটি দূর করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য প্রাপ্তি সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিডা, বেপজা, বেজা, হাইটেকপার্ক কর্তৃপক্ষ, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, এনএসআই, ইমিগ্রেশন, ও পাসপোর্ট অধিদফতর এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রবেশ যোগত্যা সম্পন্ন একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন ইন্টারঅপারেবল ডেটা সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া জানান, অবৈধ নাগরিকদের কারণে হুন্ডিতে অর্থ পাচার বাড়ছে। দেশে যে বিদেশি নাগরিক থাকুক না কেন, তাদের দেশের আইন মেনে চলে কাজ করতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post