অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকা পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। এর এক সপ্তাহ আগেই লোকসানে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
আজ শুক্রবার এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত এক মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরেই নিয়মিত লোকসানে পরিচালিত হচ্ছিল পিআইএ। যদিও আগের নির্বাচিত সরকারগুলো রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটির সংস্কার বা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তবে গত বছরের জুনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির শর্তের আওতায় তৎকালীন সরকার পিআইএ-সহ লোকসানে থাকা সকল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংশোধন বা বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। আইএমএফ চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক সপ্তাহ পর সরকার পিআইএ-কে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কাজ দেশে নির্বাচন আয়োজন করা। তবে আগস্টে বিদায়ী সংসদ কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আইএমএফের সঙ্গে ঋণ চুক্তি অনুযায়ী বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বেসরকারিকরণ বিষয়ক মন্ত্রী ফাওয়াদ হাসান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘পিআইএ বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করা সংক্রান্ত ৯৮ শতাংশই কাজ হয়ে গেছে। বিষয়টি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়ার পর এক্সেল শিটে হিসাব-কিতাব করে বাকি ২ শতাংশও শেষ করা হবে।’
ফাওয়াদ হাসান বলেন, লেনদেন বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং পিআইএ বিক্রির পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করেছে। এই পরিকল্পনা নির্বাচনের পর বর্তমান প্রশাসনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভা টেন্ডারের মাধ্যমে বা সরকার থেকে সরকারি চুক্তির মাধ্যমে পিআইএ-এর শেয়ার বিক্রি করবে কি না তাও সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র চার মাসে আমরা যা করেছি তা অতীতের সরকারগুলো এক দশকেরও বেশি সময় ধরে করার চেষ্টা করছে, কিন্তু পারেনি। এখন আর পেছন ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই।’
রয়টার্স বলছে, বর্তমানে পিআইএ-র দায় ৭৮৫ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি (২.৮১ বিলিয়ন ডরার) এবং গত বছরের জুন পর্যন্ত লোকসান হয়েছে ৭১৩ বিলিয়ন রুপি। সংস্থাটির সিইও বলেছেন, ২০২৩ অর্থ বছরে লোকসান ১২২ বিলিয়ন রুপি হতে পারে।
প্রক্রিয়াটির ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর ১১শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, একটি পৃথক সত্তায় পিআইয়ের ঋণ পরিশোধ করার পরে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ সহ ৫১ শতাংশ শেয়ার ক্রেতাদের কাছে থাকবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post