ঘন কুয়াশার কারণে রানওয়ের দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় প্রায়ই ফ্লাইট উঠা-নামা ব্যাহত হচ্ছে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে। পাশ্ববর্তী দেশগুলোতে অবতরণে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন বিমান সংস্থা। এতে লোকসান হওয়ার পাশাপাশি ফ্লাইট শিডিউলও ঠিক রাখা যাচ্ছে না। গত দুই সপ্তাহে শাহজালাল বিমানবন্দরে অন্তত ২০টি ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারেনি ঘন কুয়াশার কারণে। বাধ্য হয়ে কোনো কোনো ফ্লাইট নামতে হয়েছে ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের।
আইএলএস ক্যাটাগরি-২ চালু না হওয়া পর্যন্ত ভোরের ফ্লাইট রি-শিডিউল করা হচ্ছে বলে জানান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।
ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা বা ভিজিবিলিটি কমে গেলেও বিশ্বের সব দেশের বিমানবন্দরেই যন্ত্রের সাহায্যে আইএলএস পদ্ধতি ব্যবহার করে অবতরণ করা হয়। বিমানবন্দরের রানওয়ে যদি ৫০০ মিটার পর্যন্ত দেখা যায়, তাহলে আইএলএস ক্যাটাগরি হতে হবে ২। আর দৃষ্টিসীমা ৫০ থেকে শূন্য মিটারে হলে প্রয়োজন আইএলএস ক্যাটাগরি-৩।
কিন্তু ঢাকার এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি এখনো ক্যাটাগরি-১ এই রয়ে গেছে। যার কারণে ৮ শ’ মিটারের কম দৃষ্টিসীমা হলেই ফ্লাইট উঠানামা করা যাচ্ছে না। এতে অর্থনৈতিক লোকসানের পাশাপাশি ফ্লাইট শিডিউল নিয়েও বেকায়দায় বিমান সংস্থাগুলো।
ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এমডি শফিউল আজিম বলে, যখন ফ্লাইট ডাইভার্ড করতে হচ্ছে, তখনই জ্বালানি পুড়ছে। এতে ব্যয় বাড়ছে। আর যাত্রীদের শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এতে সুনাম নষ্ট হচ্ছে বিমান সংস্থার।
নভোএয়ারের এমডি মফিজুর রহমান জানান, শূণ্য দৃষ্টিসীমার মধ্যেও অনেক বিমানবন্দরে বিমান উঠানামা করা যায়। অথচ আমরা এখনো ক্যাটাগরি-১ এই পড়ে আছি। ফ্লাইট ডাইভার্ড হলেই খরচ বাড়ে প্রায় দ্বিগুন। আমরা দ্রুত ক্যাটাগরি-২ করার দাবি করছি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, রানওয়ের ক্যাটাগরি-২ করার জন্য কাজ চলছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে ভোরের ফ্লাইটগুলো রি-শিডিউল করা হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে সম্প্রতি বেশ কিছু ফ্লাইট ডাইভার্শন করতে হয়েছে। আমাদের রানওয়ের দৃষ্টিসীমা কম হওয়ায় ফ্লাইট উঠানামা করা যায় না। তাই ভোরের ফ্লাইটগুলো রি-শিডিউল করে অন্য সময় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, বিমানবন্দরে আইএলএস ক্যাটাগরি-দুই উন্নীত করতে ২০২২ সালে কাজ শুরু হলেও, এখন পর্যন্ত কেবল রানওয়ের বাতি বসানোসহ ইলেকট্রিক সিস্টেমের কাজ শেষ হয়েছে। এখনও বাকি কন্ট্রোল প্যানেল বসানো ও ইন্টারফেসিংয়ের কাজ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post