উত্তর কোরিয়া গত সপ্তাহে একটি নতুন গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর চলাচলের ওপর নজরধারি চালাতে এমন স্যাটেলাইট চালু করে দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিভাগ (ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট) স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত এবং পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করার জন্য গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ এনে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তি গ্রুপ কিমসুকির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ট মিত্র হিসেবে পরিচিত উত্তর কোরিয়া এতদিন পর্যন্ত যক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলোর স্যাটেলাইটের নজরদারিতে ছিল। এবার তারা নিজেরাই কক্ষপথে একটি স্যাটেলাইট পাঠিয়ে অন্যান্য দেশ বিশেষ করে মোড়ল রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর ওপর নজরদারি চালাতে সামর্থ্য হয়েছে। একে প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের জন্য একটি বড় অর্জন বলে দাবি করছে পিয়ংইয়ং।
গত মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম কেসিএনএর বরাতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গোয়েন্দা স্যাটেলাইটে ধারণ করা হোয়াইট হাউজ, পেন্টাগন ও মার্কিন রণতরীর ছবি নিরীক্ষা করেছেন দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন।
এদিকে, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র চুক্তির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনটি সংস্থার উপর চলতি বছরের ১৬ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ইউক্রেনে চালানো রুশ হামলায় সমর্থন করতে চায়, এমন যে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওয়াশিংটন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিভাগ বা ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, রাশিয়া ক্রমবর্ধমানভাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ টিকিয়ে রাখতে, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত যুদ্ধাস্ত্র এবং ভারী সরঞ্জাম হারিয়ে এখন উত্তর কোরিয়া এবং অন্যান্য মিত্রদের দিকে সাহায্যের চাইতে বাধ্য হয়েছেন।
এর আগে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর এক মাসের মাথায় ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। পিয়ংইয়ং আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালানোর পর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার অধীনে আসা ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ‘উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে স্পর্শকাতর তথ্য সরবরাহের অভিযোগ’ রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির ধাক্কা সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণের কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল উত্তর কোরিয়াকে তার বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসতে বাধ্য করা। যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিষেধাজ্ঞা বিলগুলোতে সই করেছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post