বাংলাদেশিদের ব্যাপারে কঠোর ভিসানীতি আরোপ করেছে ওমান। মঙ্গলবার এক বিবৃতির মাধ্যমে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য সব ক্যাটাগরির ভিসা ইস্যু স্থগিত রাখার কথা জানায় দেশটির রয়্যাল ওমান পুলিশ। আর এই ঘোষণার পর থেকেই বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওমানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকা বাংলাদেশিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি প্রবাস টাইমকে জানান, তিনি ওমানে যাওয়ার জন্য এজেন্সিকে ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন। আজ কাল করে করে কোম্পানির গাফেলতিতে ৩ মাসেও হাতে ভিসা পান নি। এখন ভিসা বন্ধ করার ঘোষণা শুনে দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠেছেন। তার মতই অসংখ্য বাংলাদেশি ওমানে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেও এখন নতুন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে স্বপ্নভঙ্গের হুমকিতে পড়েছেন।
এদিকে, কেন আচমকা বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হলো
সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন ওমানে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, এক দুইটি নয়, একাধিক কারণ এর জন্য দায়ী। যা লম্বা সময় ধরে পর্যালোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওমান। তাদের মতে, দেশটিতে বর্তমানে ৭ লাখ ১৪ হাজার বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে বড় একটা অংশই কোথাও কাজ পাচ্ছেন না, না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ থাকার মত যায়গা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমন সংকটের মধ্যেও দেশটিতে বাংলাদেশিদের ঢল থামছিলোই না।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে প্রায় দেড় লাখ, চলতি বছরের প্রথম ভাগে অন্তত ১ লাখ বাংলাদেশি ওমানে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের এই অনিশ্চিত মাইগ্রেশন বাংলাদেশিদের সংকট আরও ভয়াবহ করে তুলছিলো।
আড়ালে থাকা আরও একটি কারণ হলো ওমানে বাংলাদেশিদের ক্রমবর্ধমান অপরাধপ্রবণতা। শ্রম আইন লঙ্ঘন থেকে মাদক দ্রব্য ক্রয় বিক্রয়, চুরি, চোরাচালানসহ সবরকমের ফৌজদারি অপরাধকাণ্ডে সবার আগে বাংলাদেশিদের নাম উঠে আসে। যা স্থানীয় নাগরিকদের কাছে বাংলাদেশিদের ইমেজ সংকট তৈরি করে। সবশেষ ওমানিদের সেই বিরক্তি, ক্ষোভ আর অসন্তুষ্টি বাংলাদেশিদের ভিসায় স্থগিতাদেশ ডেকে আনলো।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post