চলতি বছরের জানুয়ারিতে যেসব নাগরিকের বয়স ১৮ বছর হয়েছে কিন্তু আজকের মধ্যে ভোটার হওয়ার আবেদন করেননি তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। তবে আজকের পরে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করলে শুধুমাত্র এনআইডি কার্ড পাবেন নাগরিকরা। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত নতুন ভোটার ও ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদনের সময়সীমা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে আজকের মধ্যে যারা ভোটার এলাকা পরিবর্তন ও নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করেছেন তারা আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, যাদের বয়স চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ১৮ বছর হয়েছে কিন্তু ভোটার হননি, তাদের সংসদ নির্বাচনের ভোটার হওয়ার জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুযোগ দিয়েছিল কমিশন। তবে যারা এই সময়টাও কাজে লাগাতে পারছেন না, কিন্তু এনআইডি প্রয়োজন তাদের সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ১ জানুয়ারির পূর্বে যাদের বয়স ১৮ হলেও ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভোটার হতে কোনো আবেদন না করবেন, তাদের এনআইডির প্রয়োজন হলে ১৪ সেপ্টেম্বরের পরেও আবেদন করে তা নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে তারা সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
অন্যদিকে, যাদের বয়স ১ জানুয়ারির পর ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছেন, তাদের ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে প্রয়োজনে এনআইডি পাবেন। এছাড়া যাদের এনআইডির তথ্য সংশোধন করা প্রয়োজন তারাও আবেদন করতে পারবেন এবং সংশোধন সংক্রান্ত কার্যক্রম সংসদ নির্বাচন চলাকালীনও অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনাও দিয়েছে কমিশন। ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ১ জানুয়ারি ২০২৩ বা তার পূর্বে ১৮ বছর বয়সী ও ডাটাবেজে অর্ন্তভুক্ত ১৮ বছর ঊর্ধ্ব নাগরিকদের ভোটার তালিকায় সর্বশেষ অন্তর্ভুক্তি এবং আবাসস্থল পরিবর্তন অথবা অন্যবিধ কারণে ভোটার স্থানান্তরের জন্য প্রাপ্ত আবেদনসমূহ উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক নিষ্পত্তিকরণের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বরের পরও ১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ বা তার পূর্বে যাদের বয়স ১৮ বা তদূর্ধ্ব হয়েছে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা পূর্বের ন্যায় যোগ্য নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রেখে তথ্যসমূহ ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ কর্তৃক জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং ১৪ সেপ্টেম্বরের পর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে তথ্যের সংশোধন সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন সদয় সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
গত ১৬ আগস্ট ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। সেই তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি জানাতে সময় দেওয়া হয়েছে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে তা নিষ্পত্তির শেষ সময় ১৭ সেপ্টেম্বর। আর ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৪ সেপ্টেম্বর। সর্বশেষ ২০২২ সালের হালনাগাদ অনুযায়ী দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন। তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করায় এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
খসড়া তালিকা অনুযায়ী, এবার ৪২ হাজার ৪০০টির মতো ভোটকেন্দ্র হতে পারে। আর ভোটকক্ষ হতে পারে দুই লাখ ৬১ হাজার ৫০০টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোট ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৯৯টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়। বিদ্যমান ভোটারদের মধ্যে অনেকেই এনআইডি সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে। তাদের জন্য সংশোধনের সুযোগটি অবারিত রাখল নির্বাচন কমিশন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post