অনলাইনে আউটসোর্সিং কাজের মাধ্যমে চাকরির পাশাপাশি বাড়তি ইনকামের লোভ দেখিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠানো হয় এসএমএস। এরপর তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় টেলিগ্রামের একটি গ্রুপে। সেখানে বিভিন্ন কাজ করানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই চক্রের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার পর সেখানে কাজের টাকা জমা হয়। এরপর অ্যাকাউন্টে ঝামেলা আছে বলে টাকা তোলার আগে ডিপোজিট করতে বলা হয়। ভুক্তভোগীরা টাকা জমা করলেই সেই টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র।
এভাবে ভুক্তেভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে দেশ থেকে সেই টাকা পাচার করা হয় দুবাইয়ে। অবশেষে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের (বন্দর ও পশ্চিম) উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন। গ্রেপ্তাররা হলেন প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন আল ফয়সাল, আরেফা বেগম ও নিজাম উদ্দিন। তবে এই চক্রের মূলহোতা আরেফা বেগমের ছেলে ও ফয়সালের ভাই সম্রাট (২৬) এবং মান্নান নামের এক ব্যক্তি দুবাইয়ে বসে নিয়ন্ত্রণ করেন সবকিছু।
এই পর্যন্ত প্রতারণায় জড়িত এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে গত ২ মাসে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ও আরেকটিতে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকাসহ কারও অ্যাকাউন্টে ১৮ লাখ টাকা, কারওটিতে ১৫ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। আটক আসামিদের কাছ থেকে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৪ টাকা নগদ ও চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের (বন্দর ও পশ্চিম) উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘www.forttunemix.com নামের একটি ওয়েবসাইটে আউটসোর্সিং কাজের কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তিকে যুক্ত করা হয়। প্রথমে তাদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হয়। তারপর কাজ করতে সম্মতি দিলে টেলিগ্রামের একটি গ্রুপে যুক্ত করা হয়। কাজ করার সময় ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। সেই অ্যাকাউন্টে আউটসোর্সিংয়ের কাজের সময় লাখখানেক টাকা জমলে সেটা তোলার সময় প্রি-ডিপোজিট জমা করতে বলা হয় ভুক্তভোগীদের। অ্যাকাউন্টে ঝামেলা হয়েছে বলে সেই টাকা নেওয়া হয়। এরপর ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা পেলে সেটি হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র।’
তিনি বলেন, ‘হাতিয়ে নেওয়া সেই টাকা প্রথমে পাঠানো হয় দেশের কোনো ব্যক্তির কাছে। এরপর সেই টাকা আবার হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয় দুবাইয়ে। গ্রেপ্তার আসামি ফয়সালের ভাই সম্রাট হচ্ছেন এসব অপকর্মের মূলহোতা। দেশ ঘুরে সেই টাকা দুবাইতে সম্রাটের কাছে চলে যায়। সম্রাটের বাড়ি হাটহাজারীতে, অপরজন মান্নানের আরেকজন সাতকানিয়ার মান্নান। এই দু’জন Panni, Nabila Jahan, Cristine সহ বিভিন্ন ছদ্মনামে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আউটসোর্সিং কাজের প্রস্তাব দেয় ভুক্তভোগীদের।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post