আমেরিকায় ‘মাংসখেকো ড্রাগ’ দ্রুত ছড়াচ্ছে, শঙ্কায় চিকিৎসকরা। আমেরিকার রাস্তায় সম্প্রতি ভয়ানক এক ড্রাগ অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষ বাড়ছে। মারাও যাচ্ছে একাংশ। ‘জম্বি ড্রাগ’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ড্রাগটি মাদক হিসেবে নেওয়ায় শরীরের মাংস পচে মৃত্যুর হার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের তথ্য বলছে, ‘জম্বি ড্রাগের’ অতিরিক্ত মাত্রা দেশটিতে প্রতি পাঁচ মিনিটে একজনের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। ড্রাগটি অতিরিক্ত মাত্রায় নেওয়ার কারণে আক্ষরিক অর্থেই মানুষের শরীর পচে যাচ্ছে। চিকিৎসা পেশায় নিযুক্তরা এই ড্রাগের প্রভাব কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে লড়াই করছেন।
এই ভয়ানক ড্রাগ শরীরে অল্প নিলেই মাদকাসক্ত ব্যক্তি চলে যান অন্য কোনও জগতে। দীর্ঘ সময়ের জন্য বাস্তব ভুলে এক কল্পনার জগতে বিচরণ করতে থাকেন তিনি। আর এর সামান্য ‘ওভারডোজ’ হলে ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
‘জম্বি ড্রাগ’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ট্রাঙ্ক’ নামে বিক্রি হয়। ড্রাগটি সাধারণত গরু ও ঘোড়াকে অচৈতন্য করতে ট্রাঙ্কুইলাইজার হিশেবে ব্যবহৃত হয়। এটি এখন আমেরিকায় বন্যার পানির মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। লোকজন অবৈধ উপায়ে তা সংগ্রহ করছে। ড্রাগ ডিলাররা প্রায়ই ফেন্টানাইল এবং হেরোইনের মতো অন্যান্য অবৈধ ওষুধের সঙ্গে এটি মেশায়।
‘ট্রাঙ্ক’ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। কারণ এটি অবৈধ পথে দেশে আসা অন্যান্য ওষুধকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এটি চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়াচ্ছে। যা চিকিৎসা পেশায় জড়িতদের পক্ষে কার্যকরভাবে সমস্যাটির সমাধান করা অত্যন্ত কঠিন করে তুলেছে।
এ বিষয়ে সম্প্রতি ম্যাসাপেকুয়া পার্কে দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্টকে সাক্ষাৎকার দেন ‘ভিক্টোরি রিকভারি পার্টনারের’ বোর্ড-প্রত্যয়িত সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. পাওলো কপোলা। তিনি বলেন, ‘কেউ যখন শরীরে ট্র্যাঙ্ক নেয় তাঁর ক্লিনিকাল ছবি অনেক বেশি নারকীয় হয়ে ওঠে। এটা অনুসরণ করা অনেক কঠিন এবং আরও অনেক কিছু ভুল হতে পারে।’
ডা. কপোলা বলেন, জাইলাজিন যুক্ত ওভারডোজের চিকিৎসা করা অনেক কঠিন। কারণ ওভারডোজের উত্তেজনা প্রশমনে ‘নারকান’ ইনজেকশন প্রয়োগও কাজ করে না।
‘যখন একজন আসক্ত ব্যক্তি কোকেন এবং হেরোইনের একটি স্পিডবল সেবন করে, তখন আমরা কোনো সমস্যা ছাড়াই এটি মোকাবিলা করতে পারি। আপনি হেরোইনের বিপরীত কিছু ব্যবহার করুন যাতে তারা আবার শ্বাস নিতে শুরু করে এবং আপনি কোকেন শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু জাইলাজিন সেভাবে কাজ করে না।’ বলছিলেন এই চিকিৎসক।
তিনি বলেন, যখন তারা জরুরি কক্ষে আসে, ‘আপনি নারকান (ইনজেকশন) প্রয়োগ করলে তারা সম্পূর্ণরূপে জেগে উঠবে বলে আশা করেন…। কিন্তু হঠাৎ করেই এটি সত্যিই কাজ করছে না; তারা জেগে উঠছে না।’
ডা. কপোলা ব্যাখ্যা করেছেন, ট্রানকুইলাইজারের উপস্থিতি চিকিৎসকদের রোগীর ক্রমহ্রাসমান রক্তচাপ বা দ্রুত হ্রাস পেতে থাকা হৃদস্পন্দনকে স্থিতিশীল করার উপায় হিশেবে বিকল্প ওষুধের দিকে যেতে বাধ্য করে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post