দেশে কমছেই না হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো। ব্যাংকের পরিবর্তে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে টাকা বেশি পাওয়ার কারণে প্রাবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকে। এর ফলে কমছে রেমিট্যান্সের পরিমান। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পর এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাব ব্যবহার করে হুন্ডির টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে সন্দেহজনক চারটি হিসাব যাচাই করে তিনটিতেই হুন্ডির প্রমাণ পেয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহার করে সারাদেশে কী পরিমাণ হুন্ডি হচ্ছে, তা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএফআইইউ। সতর্ক এবং কর্মপন্থা ঠিক করতে এরই মধ্যে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা বিশেষায়িত এ ইউনিট।
বিএফআইইউর প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, নোয়াখালীর চাটখিলের রেজ্জাকপুরে আদর্শ টেলিকম এবং বাবর টেলিকম নামে পাশাপাশি দুটি দোকান ভিন্ন দুই মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট। তারা স্থানীয় দুটি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে হিসাব খোলে। এ হিসাবে মূলত হুন্ডির টাকা পেত তারা। এর পর সুবিধাভোগীর চাহিদা অনুযায়ী কখনও আরেক হিসাবে স্থানান্তর করত। কখনও সেখান থেকে নগদ টাকা দিত। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবেও টাকা পাঠাত। গত দুই বছরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ দুটি এজেন্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে ৫২ কোটি টাকা স্থানান্তর হয়েছে। বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ এপ্রিল দুটি দোকানের স্বত্বাধিকারীকে আটক করে সিআইডি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হুন্ডি চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।
বিএফআইইউর প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস বলেন, এমএফএসের পর কয়েকটি এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবের তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্দেহজনক হুন্ডি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এমএফএস, এজেন্ট ব্যাংকিংসহ কোনো মাধ্যম ব্যবহার করে হুন্ডি কারবারিরা যেন অবৈধ লেনদেন করতে না পারে, তার জন্য কঠোর তদারকি অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হুন্ডি ঠেকাতে গত ১০ এপ্রিল এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে বিএফআইইউ। সেখানে এ প্রবণতা ঠেকাতে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশের ২১ হাজারের বেশি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং এসব এজেন্টের আওতায় খোলা সব হিসাবের অনলাইন তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর পর নির্দিষ্ট একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট আলাদা করা হবে। সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত প্রতিটি হিসাব আবার যাচাই করে আইনি ব্যবস্থার জন্য পাঠানো হবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post