পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ বলা হয় যে দেশটিকে তার নাম সুইজারল্যান্ড। বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে অন্যতম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য। তবে শুধু বেড়ানোর জন্য নয়, সব বিচারেই দেশ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম এবং ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট এর প্রতিবেদনে দ্বিতীয় বারের মতো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করলো সুইজারল্যান্ড। দেশটির রাজধানী শহর বের্ন। এছাড়া বিখ্যাত শহর মধ্যেগুলোর মধ্যে জেনেভা এবং জুরিখ অন্যতম। সুইজারল্যান্ডের মুদ্রার নাম সুইস ফ্রাঙ্ক। দেশটির মোট আয়তন ৪১ হাজার ২৮৫ বর্গকিলোমিটার। আয়তনে ছোট হলেও দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণ।
জেনেভা বিশ্বব্যাপী কূটনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু। কেউ কেউ একে সম্মেলনের শহর বা গ্লোবাল সিটি বলে অভিহিত করে। এ শহরে ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস কমিটি ও জাতিসংঘের ইউরোপীয় দফতর ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। তবে জেনেভার সবুজাভ পরিবেশ প্রকৃতি-প্রেমীদের বেশি টানে। স্থানীয়দের কাছে জেনেভা ‘পার্কের শহর’ হিসেবেও পরিচিত। ল্যাক লেম্যান জলপ্রপাত ও জেট ডিইয়াউ পাহাড়ের মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির টানে সব দেশ থেকেই ভ্রমণপিপাসুরা আসেন।
সুইজারল্যান্ড এমন একটি দেশ, যেখানে ১৮১৫ সালের পর আর কোনো যুদ্ধ হয়নি। তাছাড়া বিশ্বযুদ্ধের সময়ও আক্রান্ত হয়নি। ১৯২০ সালে সুইজারল্যান্ড জাতিপুঞ্জের সদস্য হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি সুইজারল্যান্ডের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করলেও তারা কোনো প্রকারের আক্রমণ করেনি। ১৯৬৩ সালে দেশটি ইউরোপের কাউন্সিলে যোগ দেয়। ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ৮৬ লাখ ৩৭ হাজারের অধিক মানুষ বসবাস করে।
সুইজারল্যান্ড বহুভাষী রাষ্ট্র এবং এখানে চারটি রাষ্ট্র ভাষা রয়েছে- জার্মান, ফরাসি, ইতালীয় এবং রোমানীয়। বাকিরা স্পেনীয়, পর্তুগিজ আর তুর্কী ভাষায় কথা বলেন। সুইজারল্যান্ডের শিক্ষার হার ১০০ শতাংশ। ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সে শিক্ষা বাধ্যতামূলক। অধিকাংশ অধিবাসী রোমান ক্যাথলিক ধর্ম চর্চা করেন। এরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ। এছাড়া মুসলমান, সনাতন, খ্রিষ্টান এবং ইহুদীসহ অন্যরা নিজ নিজ ধর্ম পালন করেন।
সুইসব্যাংকে কালো টাকা নিরাপদের সংরক্ষণের জন্য কুখ্যাতি থাকলেও সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি, ট্রেন এবং চকলেটের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। দেশটির কোনো নিয়মিত সেনাবাহিনী নেই। দেশটির রাজনৈতিক অবস্থা ভারসাম্যমূলক ও অত্যন্ত স্থির। সুইস সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিবছর ১ জানুয়ারি তারিখে দেশটির রাষ্ট্রপতি পরিবর্তিত হয়। ছয় বৎসরের জন্য গঠিত মন্ত্রীপরিষদের একেক জন মন্ত্রী এক বৎসরের জন্য রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
আরো পড়ুন:
ছুটিতে দেশে এসে সৌদি প্রবাসীর মৃত্যু
বেড়েছে প্রবাসী আয়, রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলার
হুন্ডিতে টাকা নিলে বিপদে পড়বেন প্রবাসীর স্বজন
মৃত্যুকূপ পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছে ৩৮ বাংলাদেশি
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post