পরিবেশ ছাড়পত্র ও অনুমতি ছাড়া চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোসহ দেশের বেশ কয়েকটি তামাক প্রস্তুতকারক কোম্পানির সিগারেট উৎপাদন নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে অবৈধভাবে বিড়ি-সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে অবৈধভাবে বিড়ি-সিগারেট উৎপাদনকারী কোম্পানি অতিদ্রুত বন্ধ এবং অবৈধ কোম্পানিতে উৎপাদিত বিড়ি-সিগারেট জব্দ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, বন ও পরিবেশ সচিব, শিল্প সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ নয়জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত এসব কোম্পানি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ-সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শেখ রফিকুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ রোবাইয়েত ইসলাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
ব্যারিস্টার শেখ রোবাইয়েত ইসলাম জানান, গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে একটি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশের পর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ৮ ডিসেম্বর রিট করা হয়। সারাদেশে অবৈধ বিড়ি-সিগারেট ফ্যাক্টরি নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন মাদকদ্রব্য ও নেশাবিরোধী কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পারভীন আক্তার। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
জানা যায়, স্থানীয় বেশ কয়েকটি তামাক উৎপাদনের কারখানা রয়েছে। সেগুলো হলো— চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো, কিশোরগঞ্জের হেরিটেজ, তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো, মানিকগঞ্জের বিউটি টোব্যাকো, গাজীপুরের ভার্গো, কুষ্টিয়ায় এইচআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও এএলএম টোব্যাকো, রংপুরের এসডি টোব্যাকো লিমিটেড, নরসিংদীর ব্ল্যাক টোব্যাকো কোম্পানি, নোয়াখালীর ইনডিপেন্ডেন্ট টোব্যাকো, বগুড়া টোব্যাকো, এবি টোব্যাকো, নাটোরের সামির টোব্যাকোসহ মোট ১৮টি কোম্পানি।
এসব কোম্পানি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭ লঙ্ঘন করে তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সিগারেট উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। কারখানাগুলোর কোনোটিরই সফল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের নকশা ও সময়সূচি নেই।
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও শিল্পাঞ্চলের সিগারেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ একের পর এক প্রতারণা ও বেআইনি কাজ করেও থামছে না। মামলা-জরিমানা কোনো কিছুই তাদের অপকর্মকে থামাতে পারছে না।
পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় ২০১৯ সালে এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয় বেশ কিছুদিন। সিগারেটের ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ায় চট্টগ্রামের কাস্টমস কমিশনারেট কয়েক দফায় বিপুল অংকের টাকা জরিমানা করে ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোকে। সবশেষ গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ভ্যাট গোয়েন্দারা এই প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হানা দিয়ে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ ব্যান্ডরোল জব্দ করে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post