ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী বিদেশি আগ্রাসন এবং গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার জবাবে তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করায়, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো ইয়েমেনের ওপর ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। সোমবার রাতে ইসরায়েলি বিমানগুলো হুদায়দাহ বন্দর শহর লক্ষ্য করে ৩০টিরও বেশি বোমা বর্ষণ করে।
একজন উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা এই বিমান হামলাগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং জানান যে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানের প্রধান মিত্র ও সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই হামলায় ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছে। ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা সাবা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুইজন নিহত ও ৪২ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
বন্দরের একজন কর্মী জানিয়েছেন, হামলার সময় দুটি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হচ্ছিল, যার ফলে বন্দরটিতে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ইয়েমেনের আল-মাসিরা টেলিভিশন জানিয়েছে, গত ৪ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্র আল-জাওফ ও মারিবসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন প্রদেশে ৩৫টি বিমান হামলা চালিয়েছে। মার্চ মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরায়েল ইয়েমেনে নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং দাবি করছে যে, তারা এই আরব দেশটিতে ১,০০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।
আরও পড়ুন
এই অভিযানের ঘোষিত উদ্দেশ্য হলো লোহিত সাগরে ইসরায়েলি ও ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজে ইয়েমেনি বাহিনীর হামলা বন্ধ করা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড (ইসরায়েল)-এর গভীরে তাদের সামরিক তৎপরতা থামানো।
এদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের এই সাম্প্রতিক সামরিক পদক্ষেপটি এসেছে ইয়েমেনের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায়, যা তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালের কাছে আঘাত হানে। ইয়েমেনি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই নতুন প্রতিরোধমূলক অভিযান চালিয়েছে। ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি রবিবার জানান, এই হামলার কারণে ৩০ লাখেরও বেশি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে এবং বিমানবন্দরের কার্যক্রম এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ছিল। ইয়েমেনি সেনাবাহিনী এই মার্কিন আগ্রাসনের মুখে দৃঢ় ও অটল থাকবে বলেও তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।