কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল, যার আগুনের ভয়াল রূপ নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। দাবানলের কারণে ইতোমধ্যে প্রদেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে। দাবানল থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীর উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হচ্ছে।
মূলত ম্যানিটোবা ও প্রতিবেশী সাসকাচোয়ান প্রদেশে একযোগে দাবানলের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ম্যানিটোবায় ২৫টি সক্রিয় দাবানলের মধ্যে ১০টি একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় রয়েছে। সাসকাচোয়ানে চলছে আরও ১৬টি দাবানল, যার মধ্যে ৭টিকে “অনিয়ন্ত্রিত” হিসেবে চিহ্নিত করেছে কানাডার ইন্টারএজেন্সি ফরেস্ট ফায়ার সেন্টার (সিআইএফএফসি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, উভয় প্রদেশেই বর্তমানে আগুনের উচ্চ ঝুঁকি বিরাজ করছে।
মানিটোবার উত্তরাঞ্চলের ফার্স্ট নেশনস জনগোষ্ঠীর বসতি পুকাতাওয়াগান এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে দ্রুত গতিতে। কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনী, ম্যানিটোবা ওয়াইল্ডফায়ার সার্ভিস ও হেভি আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম যৌথভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে হেলিকপ্টার ও উড়োজাহাজ ব্যবহার করে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও
ফ্লিন ফ্লন শহরের সব বাসিন্দাকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার মানুষের এই শহর বর্তমানে ফাঁকা, সেখানে কেবল জরুরি দমকল কর্মী ও সহায়তাকারী টিম অবস্থান করছেন। অন্যদিকে, পুকাতাওয়াগান থেকে এখনও ২ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরানো বাকি রয়েছে।
এ দাবানলের ধোঁয়া শুধু কানাডাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বাতাসের মাধ্যমে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে। মিশিগান, উইসকনসিন ও মিনেসোটার বেশ কিছু অঞ্চলে বায়ুদূষণ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই ধোঁয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য “অত্যন্ত ক্ষতিকর” হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালেই কানাডায় ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে ১৭.৩ মিলিয়ন হেক্টরেরও বেশি বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জাতিসংঘের জলবায়ু সংস্থা সতর্ক করে বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবানলের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি আরও ঘন ঘন ও দীর্ঘ সময় ধরে তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে খরা ও উচ্চ তাপমাত্রা ভূমি ও উদ্ভিদকে শুষ্ক করে তোলে, যার ফলে সামান্য আগুনও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভয়ংকর রূপ নেয়।
আরও দেখুন:










