পেহেলগাঁও হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার কর্তৃক পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য দেশত্যাগের নির্ধারিত সময়সীমা ক্রমশ নিকটবর্তী হওয়ায় ভারতে বসবাসরত পাকিস্তানি হিন্দু শরণার্থীরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
কাশ্মীরে সংঘটিত ওই হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়, যা আগামী ২৭ এপ্রিল শেষ হতে যাচ্ছে। তবে, যারা দীর্ঘমেয়াদী ভিসা পেয়েছেন, সেই পাকিস্তানি হিন্দু শরণার্থীরা এই নির্দেশের আওতামুক্ত থাকবেন। কিন্তু স্বল্পমেয়াদী ভিসাধারীদের জন্য কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে বহু হিন্দু শরণার্থী চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন, কারণ পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করলে তাঁদের জীবন বিপন্ন হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা এই মানুষগুলোর কাছে স্বদেশে ফিরে যাওয়া এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শামিল বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বাসিন্দা কেতো রাম, যিনি পাকিস্তানে নিয়মিত হয়রানির শিকার হয়ে সর্বস্ব বিক্রি করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তানসহ তিনি পেহেলগাঁও হামলার কয়েক ঘণ্টা পূর্বে ভারতে পৌঁছান।
একটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেতো রাম ওই হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ‘নরকতুল্য পাকিস্তানে’ ফিরে যাওয়ার চিন্তায় তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ভারতে মৃত্যুবরণ করতেও তিনি রাজি, কিন্তু কোনো অবস্থাতেই পাকিস্তানে ফিরতে চান না।
কেতো রাম জানান, নিজের এবং তাঁর পরিবারের করুণ অবস্থার কথা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে তিনি ভারত সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। কারণ, পাকিস্তানে তাঁরা তাঁদের সবকিছু বিক্রি করে শুধুমাত্র ভারতে একটি নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় যাত্রা করেছিলেন।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানের কঠোর ধর্মদ্রোহ আইন সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন ও অবিচারের প্রধান কারণ। কমিশন মার্কিন সরকারের প্রতি পাকিস্তানকে আবারও ‘কান্ট্রি অব পার্টিকুলার কনসার্ন’ হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও দেখুন