কাল বিকেলে কুমিল্লা গিয়েছিলাম একটা মিটিংয়ে। অনেক রাত পর্যন্ত মিটিং করে রাতে ঘুমিয়ে সকালে উঠে আবার ঢাকার পথে রওয়ানা দিয়েছি। এর মধ্যে ইনবক্সে, কমেন্টে কতোজনের প্রশ্ন-আল জাজিরার ভিডিও নিয়ে কিছু বলেন। তাদের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল, কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসার আগেই দেখবো, রাষ্ট্র ক্ষমতা বদল হয়ে গেছে।
আচ্ছা তাই কী হয়েছে? আর এসব তথ্য কী আপনারা জানতেন না? আপনাদের একেকজনের কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনারা দুধের শিশু। এই দেশে যে এতো কিছু হয় আপনারা কেউই জানতেন না!
আমার গতকাল ভিডিওটা পুরোপুরি দেখা হয়নি। আজ দেখলাম। প্রথমত, আমার মনে হয়েছে, এই তথ্যগুলো আমরা কম-বেশি সাংবাদিকরা জানি। আচ্ছা জোসেফকে যে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করেছে সেটা আপনারা জানতেন না? না জানলে ২০১৮ সালের ৩১ মের প্রথম আলোর লিড নিউজটা পড়তে পারেন। শিরোনাম রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়ে দেশ ছাড়লেন জোসেফ। সব বিস্তারিত পেয়ে যাবেন।
আচ্ছা ঢাকায় যে ক্যাডার রাজনীতি ছিল সেগুলো কী আপনারা জানতেন না? আপনারা কী জানতেন না নব্বইয়ের দশকে মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জোসেফ। আপনারা কী জানতেন না আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আপনারা কী জানতেন না রাজধানীতে তখন ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপ ও ‘ফাইভ স্টার’ গ্রুপ দাপিয়ে বেড়াত।
আচ্ছা আপনারা কী জানতেন না ১৯৯৬ সালে মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানকে হত্যা করা হয় আর সেই মামলার আসামি ছিলেন জোসেফ? আপনারা কী জানতেন না জেনারেল আজিজ বিজিবি চীফ এবং পরে সেনা প্রধান হন? আপনারা কী ২০১৪ এবং২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট জানতেন না? আপনারা কী জানতেন না এই দেশের সাধারণ নাগরিকদের ফোনে নজরদারি করা হয়।
সাধারণ কোন নাগরিক হয়তো বিস্মিত হতে পারেন কিন্তু আমার ধারণা সাংবাদিকসহ এই দেশের বহু শ্রেণী পেশার মানুষ কম বেশি জানতেন। কাজেই আল জাজিরার প্রতিবেদনটি দেখে আমি খুব বেশি বিস্মিত হইনি। বরং আমি অবাক হয়েছি আল জাজিরার পরিবেশনা দেখে।
আপনাদের মনে হতে পারে, আমি আওয়ামী লীগের সুরে কথা বলছি, আর আমি জানি ফেসবুকে আওয়ামী লীগের সুরে বা আওয়ামী লীগের ভালো কিছুর পক্ষে কথা বললে বিপ্লব হয় না।
সেখানে সবসময় আওয়ামী লীগকে গালি দিতে হয় তবেই বাহবা পাওয়া যায়! আজ যদি আমি বলি আওয়ামী লীগের এই কাজটা খারাপ তখন ফেসবুকের একটা বড় অংশ খুশি আর আওয়ামী লীগের লোকেরা তখন গালি দেবে আর যদি বলি আওয়ামী লীগের এই কাজটা ভালো তখন আওয়ামী লীগ বিরোধীদের গালি খেতে হবে।
এই কারণগুলো আমি এখন জানি। সাধারণ মানুষের এই প্রতিক্রিয়ার ব্যাখাও আমি এখন বুঝি। এই দেশের মানুষ সবসময় ক্ষমতাসীনদের গালি দিতে পছন্দ করে। আর ক্ষমতাসীনরা সবসময় শুধু উন্নয়নের আলাপে মেতে থাকতে চায়। আমাদের দর্শক-শ্রোতা-সাধারণ মানুষ বেশিরভাগই ঠিক করে রাখে কোনটা সে পছন্দ করবে আর কোনটা না। এর বাইরে গেলেই বিপদ।
এ কারণেই সরকারের সমালোচনা করে লিখলে যখন আওয়ামী লীগের গালি খাই সেটা আওয়ামী লীগ বিরোধীধের চোখে পড়ে না। আবার যখন বিএপি-জামায়াতের গালি খাই সেটা বিএনপি জামায়াতের চোখে পড়ে না। কেউ কেউ আবার বলেন সাংবাদিক হিসেবে আপনার রিপোর্ট ঠিক ছিল কিন্তু ফেসবুকে আপনি সরকারের পক্ষে লিখেন।
আমার হাসি পায়। ভাই শোনেন সাংবাদিকতা একটা পেশা যেখানে রিপোর্ট করতে গিয়ে রিপোর্টারের কোন পক্ষপাত থাকা উচিত নয়। আমি আমার ১৬-১৭ বছরের সাংবাদিকতায় সেই চেষ্টাটা করেছি যে আমার রিপোর্ট যেন রিপোর্টের মতো হয়। সেখানে যেন পক্ষপাত না থাকে। কিন্তু এই আমি যখন আমার মতামত লিখি আমার ভাবনা লিখি তখন আমি চেষ্টা করি আমার ভাবনার প্রকাশ ঘটাতে। কিন্তু সাংবাদিকতায় না।
আরেকটা কথা, কখনো কোনদিন কারো কাছে মাথা বেঁচি নাই। এই দেশের কোন দল, কোন মানুষ বলতে পারবো একদিন এক মুহুর্তের জন্য, কোনদিন কোন কিছুর বিনিময়ে নিজেকে বিক্রি করেছি। ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে খুব বড় গলায় নিজের সততা নিয়ে কথা বলতে পারবো। পারবো কারণ আমার বুকের মধ্যে একটাই শব্দ বাংলাদেশ।
আর সেই বাংলাদেশকে ভালোবাসি বলেই আল জাজিরার রিপোর্ট নিয়ে কিছু কথা বলার আছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আল জাজিরার এই প্রতিবেদনটি শুধু ফ্যাক্ট-ফিগার নিয়ে ১০-১৫ মিনিটে করলেই ভালো হতো।
তারা সিনেমার মতো টানতে গিয়ে যেটা করেছে তাদের বায়াসনেস ভয়াবহভাবে প্রকাশ করেছে। এই আল জাজিরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় কাদের পক্ষে কী রিপোর্ট করেছে আমরা সেটা জানি। কাজেই আল জাজিরার উচিত ছিল পুরোনো সেসব কথা মনে রেখে বায়াসনেস ছাড়া একটা রিপোর্ট করা।
প্রথমেই দেখেন ডকুমেন্টারির না অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান। আপনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছেন কিন্তু ৩০ লাখ শহীদের কথা নেই। আপনি বলছেন, দেশ স্বাধীনের পর দুর্ভিক্ষ, বাকশাল এসবের জের ধরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা। পৃথিবীর সবচেয়ে নৃশংস এই হত্যাকে এক ধরনের স্বাভাবিক ঘটনা বলে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা।
ডকুমেন্টারিতে বলার চেষ্টা করা হইছে যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন অত্যন্ত দূর্নীতিপরায়ন মানুষ। আচ্ছা পুরো রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রীর কোন দুর্নীতিটা প্রকাশ করা হয়েছে? আচ্ছা তিনি আর্মি পুলিশে নিজের পছন্দের লোক রাখবে না তো আপনার পছন্দের লোক রাখবে? যাই হোক এটা নিয়ে আমার নিজের বক্তব্য আছে সেটা পরে বলছি। এই রিপোর্টে খালেদা জিয়াকে আনাটা ছিল অর্থহীন।
আমি বলবো পুরো রিপোর্টটা একটা পরিবারকে নিয়ে। সেটাতেই থাকলে ভালো হতো। আমরা দেখলাম বিয়ের নাচ। আচ্ছা আপনার বিয়েতে আপনার পরিবারের সদস্যরা নাচে নাই। এটাকে আমার এই প্রতিবেদনের সবচেয়ে কুৎসিত অংশ মনে হয়েছে।
একজন সাংবাদিক হিসেবে শুধু যদি এটা দেখানো হতো যে দুজন পলাতক আসামি বিয়েতে সেটাই যথেষ্ট ছিল। মায়ের বয়সী একজন নারীর নাচ দেখানো আমার কাছে বিকারগ্রস্ত মনে হয়েছে।
আমার সবচেয়ে অবাক লেগেছে এই রিপোর্টে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ এগুলোকে প্রতিষ্ঠানের বদলে কয়েকজন লোকের বাহিনী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে এখানেই আমার আপত্তি।
আরো পড়ুনঃ আবারো রেমিট্যান্সের রেকর্ড
আপনি একজন দুইজন লোকের জন্য বাহিনীগুলোকে এভাবে দুষবেন একজন নাগরিক হিসেবে আমার এখানে তীব্র আপত্তি আছে। আমার এই দেশের পুলিশ, সেনাবাহিনী সবার প্রতি আস্থা আছে আমার আস্থা নেই সেই দুষ্ট লোকদের উপর যারা এই বাহিনীগুলোকে নিজেদের কাজে ব্যাবহার করে।
এই যে যশোরে দেখলেন একজন এমপি ওসিকে বলছেন, বোমা মাইরা তারে আসামি বানাও কোথা থেকে এরা এসব বলার সাহস পায়? এই দেশে দিনের পর দিন রাজনীতিবিদরা যেভাবে পুলিশ, সেনাবাহিনী , সরকারি সব প্রতিষ্ঠান এমনকি আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেভাবে নিজেদের কাজে লাগাইছে তাতে আমার আপত্তি আছে। তীব্র আপত্তি।
আমি জানি না আমার এই কথাগুলো আপনারা কীভাবে নেবেন? আমাকে বলেন তো নিজের যোগ্যতার বদলে ব্যাচের সবচেয়ে যোগ্য মানুষটা কেন পুলিশপ্রধান, সেনাপ্রধান হবেন না? আচ্ছা মেজর জেনারেল আজিজই কী সেনাপ্রধান হওয়ার জন্য সবচেয়ে যোগ্য ছিলেন? আচ্ছা কেন বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক কাজে লাগাতে হবে?
আমি বহুবার বলেছি, আপনি কালকে পুলিশকে রাজনীতির বাইরে এনে স্বাধীনভাবে চলতে দিন, আপনি সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখুন, আমলাতন্ত্র, নির্বাচন কমিশন সবকিছুকে দেখেন এই দেশের চেহারাটাই বদলে যাবে।
এবার সরকারি দলের লোকজনের জন্য কয়েকটা কথা বলি। কোন অভিযোগ উঠলেই আপনারা সেগুলো নাকচ করে দেবেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেবেন না, কাউকে রাজনীতি করতে দেবেন না তার ফলাফল কিন্তু ভালো হবে না।
আপনারা ক্ষমতাসীনরা হয়তো ভাবছেন এই ডকুমেন্টারি আওয়ামী লীগ বা সরকারের তো কোন ক্ষতি করতে পারে নাই, সেনা, পুলিশ, বিজিবি বা বা কোন বাহিনীর কোন ক্ষতি করতে পারে নাই এটা আমি বিশ্বাস করি না।
আমি নিশ্চিত একজন সাধারণ পুলিশ সদস্য, একজন সেনা সদস্য যারা এই ভিডিও দেখেছে বিবেকবোধ থাকলে তারা কষ্ট পেয়েছেন। কারণ একজন সৎ পুলিশ তার বাহিনীকে এভাবে দেখতে চান। একজন সেনা সদস্য কোন কলঙ্ক নিতে চায় না। এই ভিডিও তাদের মনে কষ্ট দিয়েছে। এই ভিডিও বোধসম্পন্ন যে কোন মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। কাজেই সবকিছু উড়িয়ে দিয়েন না।
কোনো অভিযোগ উঠলেই সেটিকে নাকচ করে দেয়া দায়িত্বশীলতা নয়। এই যে মানুষজন এই ভিডিও দেখে ভীষণ আনন্দ পাচ্ছে কেন? কারণ সে ভাবছে সে তো কিঠছু বলতে পারছে না কাজেই কেউ একজন বলুক।
আপনার সরকারি দল-বিরোধী দল সবাই একটু ভাবেন। এই দেশটা আমাদের সবার। এই দেশের সব নাগিরকরা আমাদের। পাকিস্তান বা সৌদি বা ভারত থেকে এই দেশে কেউ পুলিশ হয় না, কেউ এমপি হয় না, এই দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় যে মারা যায় সে আমাদেরই ভাই, ক্রসফায়ারে যে মারা যায় সে আমাদেরই ভাই, বিনা বিচারে যে জেলখানায় আটক সেও আমাদের ভাই।
যে পুলিশ বাহিনী বা সেনাবাহিনীকে আপনি আজ অভিযুক্ত করছেন সে তো আমারই পুলিশ, আমারই সেনাবাহিনী। কাজেই আসুন সবাই মিলে দেশটা ঠিক করি।
দেখেন অপরাধ তো অপরাধই। পাসপোর্ট জাল যেই করুক সেটা অপরাধ, পলাতক আসামির এভাবে উড়ে আসা অপরাধ, যোগ্য কাউকে কাউকে ডিঙ্গিয়ে দলীয় বা নিজের পছন্দে কাউকে নিয়োগ দেয়া অপরাধ, বাহিনীগুলোকে নিজের কাজে লাগানো অপরাধ, নির্বাচন কমিশনকে শেষ করে দেওয়া অপরাধ।
আরো পড়ুনঃ ওমানের করোনা ব্রেসলেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
একইভাবে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রের সব কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার অপরাধ, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা অপরাধ, যখন তখন কাউকে জেলে নেয়া অপরাধ, ৫৪ ধারা অপরাধ, দুর্নীতি অপরাধ, টাকা পাচার অপরাধ। ১৯৭১ থেকে আজ পর্যন্ত দেখেন বেশিরভাগ সময় এই দেশের বড় অপরাধগুলো করেছে ক্ষমতাসীনরা। দেশের ভাবমুর্তিও তারা নষ্ট করেছে।
আপনারা যারা দায়িত্বশীল মানুষ তাদের প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ, চলুন আমরা আমাদের দেশকে বাঁচাই। দেশের মানুষকে বাঁচাই। আমাদের সেনাবাহিনী, পুলিশ, আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সবকিছুকে বাঁচাই। বাঁচাই আমাদের লাল সবুজের পতাকাকে।
একটু ভেবে দেখেন স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে চলেছে দেশটা কোথায় আছে আর কোথায় যেতে পারতো! এই যে আমাদের কৃষকরা এতো কষ্ট করে, পোষাক শ্রমিকরা এতো কষ্ট করে, প্রবাসীরা বিলিয়ন বিলিয়ন প্রবাসী আয় পাঠায় বিনিময়ে কী এমন বাংলাদেশই আমাদের পাওয়ার কথা ছিল? আসুন গালিগালাজ না করে, হিংসা বিদ্বেষ না করে ভালোকে ভালো বলি, খারাপকে খারাপ।
আপনি আওয়ামী লীগ-বিএনপি যা ইচ্ছে করেন কিন্তু মনে রাখবেন দেশটার নাম বাংলাদেশ। দেশটা আমাদের সবার। সেই দেশটা সবাই মিলে ঠিক রাখতে হবে। আর প্রতিহিংসা, ঘৃণা আর গালি দিয়ে সেটা কোনদিন সম্ভব নয়। আসুন আমরা সবকিছু নিয়ে আলোচনা করি, সমাধান খুঁজি।
আসুন আমরা আমাদের জন্য, আমাদের পরবতী প্রজেন্মের জন্য একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ি। সুশাসনের বাংলাদেশ, ভালোবাসার বাংলাদেশ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, মানবিক বাংলাদেশ। সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেককে বিবেকবোধ দিক। ভালো থাকুক বাংলাদেশ!
লেখকঃ শরিফুল হাসান,
প্রধানঃ ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post