মো: এমরান হোসেন, মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একজন তরুণ গবেষক। জন্ম কুমিল্লা জেলায়, শশীদল ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং শশীদল আবু তাহের কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেছেন। এরপর মালেয়শিয়ার লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ডিগ্রি এবং শ্রীলঙ্কার কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবন শেষে শ্রীলংকার স্বনামধন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান “দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নলেজ ম্যানেজন্ট” এ কাজ করার সুযোগ পান।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের “ওমানটেল টেলিকমিউনিকেশনে” কর্মরত এমরান শুধু তরুণ গবেষকই নন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বিশ্বে তার প্রতিভা, নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিপণন গবেষণা ক্ষেত্রে নাম কুড়িয়েছেন। তার কিছু বিশ্বমানের গবেষণা এরই মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পর্যায়ের গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কার কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত পঞ্চম আন্তর্জাতিক ICAM-5 সম্মেলনে তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী।
তার গবেষণার অসামান্য বিষয়বস্তু বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হয়েছে। এসব গবেষণার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের বহুজাতিক মোবাইল সেবা ব্র্যান্ডে প্রসিদ্ধ ব্যক্তির বিশ্বাসের উপর সেলিব্রিটি বিশ্বাসযোগ্যতার প্রভাব নিরীক্ষণ। সেলিব্রিটির বিশ্বাসযোগ্যতা বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং প্র্যাকটিস, তবে এটি অসংখ্য গবেষণামূলক স্টাডিতে বর্ণিত হয়েছে যে, এটি ক্লাটার্ড (বিলাসবহুল) মার্কেটিং পরিবেশে কার্যকরী ফলাফল পেতে সমস্যায় পড়তে পারে। বাস্তবে সেলিব্রিটি এন্ডোর্সমেন্টে জড়িত খরচ এবং ঝুঁকি বৃহত্তর বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে।
সেলিব্রিটি এন্ডোর্সমেন্ট হলো একটি পণ্যকে বাজারে পরিচিত করানোর জন্য ব্যবহৃত মুখ্য হাতিয়ার। এটি একটি নতুন প্রযুক্তি যা মার্কেটিংয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা ব্র্যান্ডের ইমেজ তৈরি এবং পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধি করে। সেলিব্রিটিরা মার্কেটিং সচেতনতা, ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি, এবং ব্র্যান্ড নির্মাণে বিশ্বাসযোগ্যতার সাথে যত্ন নিয়ে কাজ করে, তারা তাদের অনুসারীদের কাছে বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ব্র্যান্ডের প্রচার করে থাকে। যা বাংলাদেশেও খুব জনপ্রিয়। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেলিব্রিটিদের অপব্যবহারের কারণে ব্র্যান্ড বিল্ডিংয়ের উপর খারাপ প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ যেখানে মার্কেটে অনেক ব্র্যান্ডের উপস্থিতি রয়েছে। এখানকার বাজারে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হয়। এখানে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোও বিপাকে পড়েছে কাকে ছেড়ে কাকে বিজ্ঞাপনের জন্য এন্ডোর্স করবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর আরো একটা বড় সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ সেলিব্রিটিই ভোক্তা বিশ্বাস অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। যার প্রভাবে ব্র্যান্ডের ইমেজ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বেশিরভাগ সেলিব্রিটির কারণে ব্র্যান্ডগুলো ভোক্তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত এখানে খুঁজে পাবেন।
এমরান হোসেন বিদেশে থাকলেও তিনি তার প্রিয় দেশকে ভালোবাসেন। তাই দেশের সকল প্রাইভেট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে অধ্যয়নের সাথে সাথে অন্তত কিছু গবেষণামূলক কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে করে তারা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়া এবং আন্তর্জাতিক চাকরির প্ল্যাটফর্মে আরো সফল হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করেছেন যে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত গবেষণা অনুশীলন, উদ্ভাবন এবং প্রকাশনার ব্যবস্থা রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা খুবই সীমিত। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। সকল প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত মানের গবেষণা সুবিধার ব্যবস্থা করা।
মূল লেখা: এমরান হোসেন, ওমানটেল টেলিকমিউনিকেশনে কর্মরত বাংলাদেশি
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post