সামরিক সরঞ্জামের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী ড্রোন হিসেবে পরিচিত বায়রাকতার টিবি-২ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করেছে। এছাড়াও, আজারবাইজান, লিবিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশে সামরিক অভিযানে এই ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছে।
এই সাড়া জাগানো ড্রোনের উদ্ভাবক হলেন সেলচুক বায়রাকতার নামক এক তুর্কি প্রকৌশলী। তবে তিনি কেবল একজন প্রকৌশলী নন, বরং একাধারে পাইলট এবং সফল ব্যবসায়ীও। সেলচুক বায়রাকতার তুরস্কের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়কারের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বায়রাকতার টিবি২ ড্রোন এবং তুরস্কের প্রথম মানববিহীন যুদ্ধবিমান বায়রাকতার কিজিলেলমার প্রধান নকশাকার হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন।
১৯৭৯ সালে ইস্তাম্বুলের সারিয়ের জেলায় সেলচুক বায়রাকতারের জন্ম। ১৯৮৪ সালে তার পিতা ওজদেমির বায়রাকতার বায়কার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে এই প্রতিষ্ঠানটি গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি করলেও পরবর্তীতে প্রতিরক্ষা খাতে নিজেদের প্রসারিত করে। সেলচুক ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এমআইটি)-এর মতো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন
তরুণ তুর্কি প্রকৌশলী সেলচুক দেশে ফিরে ড্রোন প্রযুক্তির গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বেই বায়রাকতার টিবি২ ড্রোনটি তৈরি হয়, যা খুব অল্প সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জন করে। তার গবেষণা মূলত মানববিহীন বিমান ব্যবস্থাপনা ও স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। ব্যক্তিগত জীবনে সেলচুক বায়রাকতার তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের জামাতা। তিনি তুরস্কের জাতীয় প্রযুক্তি উদ্যোগের একজন প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তি শিক্ষায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
বর্তমানে বায়রাকতার টিবি২ ড্রোন বিশ্বজুড়ে অন্যতম কার্যকর ও জনপ্রিয় ড্রোন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তুরস্ক ছাড়াও ইউক্রেন, আজারবাইজান, লিবিয়া, ইথিওপিয়া, সিরিয়া এবং নাগোরনো-কারাবাখের মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এই ড্রোন সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত হয়েছে। এই ড্রোনের কার্যকারিতা আধুনিক যুদ্ধ কৌশলে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বায়রাকতার টিবি-২ তার নিখুঁত লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচের জন্য সুপরিচিত। এই ড্রোন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পকে বিশ্ব মঞ্চে এক উল্লেখযোগ্য অবস্থানে নিয়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাজারে তুরস্কের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
আরও দেখুন