শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে সব আইনি পথ অবলম্বন করবেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় দেয়া ওই সাক্ষাৎকার সোমবার হিন্দুর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করা হয়েছে।
হিন্দুর সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এখনো আপনার সরকার (শেখ হাসিনার) প্রত্যার্পণের অনুরোধ জানায়নি। (ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে) একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে।’
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি মনে করি, কিছু আইনি ধাপ রয়েছে। আমরা সেগুলোর দিকে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এখনো ওই পর্যায়ে পৌঁছাইনি।’
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিচার করা হচ্ছে—এমন যুক্তি দেখিয়ে ভারত যদি (বাংলাদেশের) অনুরোধ না রাখে তাহলে কী হবে? ওই সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি কি বলছেন, ভারত চুক্তি লঙ্ঘন করবে? হ্যাঁ, (চুক্তিতে) এমন কিছু ধারা রয়েছে। কিন্তু ভারত সরকার যদি হাসিনাকে সেখানে রাখতে এগুলো প্রয়োগ করে, তাহলে সেটা আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবে না। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ খুব কম। তাই এই সময়ে হয়তো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সবকিছু মীমাংসা করা যাবে না। তবে আমাদের পরে যে সরকারই আসুক না কেন, তারা এটা ক্ষমা করবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ নিয়ে দেয়া বিবৃতির প্রসঙ্গে দ্য হিন্দুর সাংবাদিক প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান, নতুন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সময় আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত থাকার বিষয়ে তিনি কতটা আত্মবিশ্বাসী।
এর জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি।’
তখন সাংবাদিক বলেন, ‘তিনি দিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে…।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘ভালো। এখন বাংলাদেশ ও সংখ্যালঘুদের বিষয়ে বলি। সম্ভবত ট্রাম্প সঠিকভাবে অবিহিত নন। এটা অপপ্রচার, যা বিশ্বজুড়ে চলছে। কিন্তু যখন তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বাস্তবতা সম্পর্কে জানবেন, তখন তিনি অবাক হবেন যে, তাকে কতটা ভিন্নভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানানো হয়েছে। আমি মনে করি না, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে একজন নতুন প্রেসিডেন্টের কারণে সবকিছু বদলে যাবে। পররাষ্ট্রনীতি ও দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক প্রেসিডেন্ট পদে পরিবর্তনের কারণে সাধারণত পরিবর্তিত হয় না। তা ছাড়া ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যদি পরিবর্তন হয়ও তাহলে আমাদের মনে রাখতে হবে এটাও বাংলাদেশ ২, যেটাকে আমরা বলছি নতুন বাংলাদেশ। সুতরাং আমরা অপেক্ষা করব এবং যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা আসেন ও দেখেন এবং আমাদের অর্থনীতি যদি ভালো করতে থাকে তাহলে তারা খুবই আগ্রহী হবে। তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি ক্রেতা, আমাদের দিক থেকেও তাই। এটা খুবই ভালো সম্পর্ক, যা আমরা বছরের পর বছর গড়ে তুলেছি। আমাদের আশা, এটা আরও জোরদার হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post