৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আশুলিয়া থানায় হত্যাযজ্ঞে ‘নিহত’ সেই আল আমিন মারা যাননি। বেঁচে আছেন, অবস্থান করছেন সিলেটে। সেখানে কাজ করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে আশুলিয়া থানা তদন্তকারী কর্মকর্তা এখন সিলেট গিয়েছেন বলে জানিয়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ।
পুলিশ জানায়, ছাত্র জনতার আন্দোলনে আশুলিয়া থানায় যে হত্যাযজ্ঞ হয়, সেখানকার একজনের পরিচয় ছিল অজানা। সেই অজ্ঞাতকেই নিজের স্বামী আল আমিন দাবি করেন কুলসুম নামের এক নারী। ২৪ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন ওই নারী। পরে সেটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় তা এজাহারভুক্ত হয়।
তবে পরবর্তীতে কুলসুমের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কুলসুমের স্বামী সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় অবস্থান করছেন এমন তথ্যের পর র্যাবের সহায়তা চাইলে আল আমিনের ভাইয়ের খোঁজ পায় র্যাব। তার সঙ্গে কথা বলে র্যাব নিশ্চিত হন মামলায় মৃত দেখানো আল আমিন বেঁচে আছেন।
ভুক্তভোগী আল আমিনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাই আমার বেঁচে আছে। সে গত তিন দিন আগে আমাকে বলেছে মামলার বিষয়টি। আল আমিন সিলেটে থানায়ও গিয়েছিল। কিন্তু তারা কোন সমাধানের পথ দেখাতে পারিনি। তাই ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে আল আমিন। যখন র্যাব বিষয়টি জানতে পারে তখনই ভাইকে দক্ষিণ সুরমা থানায় আসতে বলি।
তবে একটি গণমাধ্যমে সিলেটে সাক্ষাৎ দেয়ার সময় আলামিন বাদী কুলসুমের ছবি দেখে নিশ্চিত হয়েছেন ছবির মানুষটি মামলার বাদী তার স্ত্রী। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়টি প্রচার হতে থাকলে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে।
গণমাধ্যমের কাছে দেয়া সাক্ষাৎকারে আল আমিন বলেন, বাবা মার অবাধ্য হয়ে মোবাইলের কথার সূত্র ধরে ভালবেসে বিয়ে করি কুলসুমকে। ঘরে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে পারিবারিক কলহ বেড়ে যাওয়ায় সময়টা ভাল যাচ্ছিল না। দেশের গণ্ডগোলের পুরোটা সময় আমি ও আমার স্ত্রী জুড়িতে অবস্থান করেছি। সে সময় আশুলিয়াতে একবারের জন্যও যাইনি। অথচ আমাকে মৃত দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন আমার স্ত্রী।
জীবিত ছেলেকে মৃত দেখিয়ে মামলার ঘটনায় হতবাক আল আমিনের বাবা নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এমনটা হওয়ায় আল আমিনসহ পুরো পরিবার এখন আতঙ্কগ্রস্ত। এমনটি কেন ছেলের বৌ কুলসুম করেছে তা মাথায়ও আসছে না। বিষয়টি নিয়ে কুলসুম কোন কথাও বলছেন না।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাকে আল আমিনকে উদ্ধারের বিষয়টি জানালে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাকিব সিলেটে গিয়েছেন। তাকে উদ্ধারের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post