সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সে ১৪ জন কর্মকর্তার নামে প্রতি মাসে নগদ বেতন-ভাতা তোলা হয় ২ লাখ টাকা। কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের স্যালারি শিটে এই ১৪ জন অ্যাসিসটেন্ট অফিসারের নাম থাকলেও কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ওয়েবসাইটের কোথাও এসব কর্মকর্তার কোনো তথ্য নেই।
এই ১৪ কর্মকর্তার নামে বেতন-ভাতা দেখিয়ে যে অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে তাকে সন্দেহজনক বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে এই ১৪ কর্মকর্তার নামে নগদ বেতন-ভাতা পরিশোধ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করছে কোম্পানির উর্ধ্বতন কমকর্তারা।
এই ১৪ অ্যাসিসট্যান্ট অফিসারের তালিকায় রয়েছেন- মুন্নি আখতার, মো. রেজাউল করিম, মো. তৌহিদুল ইসলাম, মো. জহির উদ্দিন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. শাজাহান, মো. মুজিবুর রহমান, মো. মাহবুব হোসেন, মো. আবদুর রহিম, আনোয়ার হোসেন, মো. আবদুল খালেক, মো. আরিফ হোসেন ও মো. কলিম উল্লাহ।
এই কর্মকর্তাদের নামে দেওয়া বেতন-ভাতা সংক্রান্ত স্যালারি শিটে স্বাক্ষর করেছেন কোম্পানিটির মুখ্য নির্বার্হী কর্মকর্তা (সিইও) শামসুল হুদা, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) এ বি এম হাসাঙ্গীর, কোম্পানি সচিব ও এইচআর অ্যান্ড এনডমিন (জিএম) আবদুর রউফ গোমস্তা।
নন-লাইফ বিমা খাতে ভুয়া কর্মকর্তাদের নামে বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এরই মধ্যে ভুয়া কর্মকর্তাদের নামে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাৎ বন্ধে নানা পদক্ষেপ নেয় এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। কিন্তু এরপরও বন্ধ হচ্ছে না ভুয়া কর্মকর্তার নামে বেতন-ভাতা দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ।
সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। যিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর থেকে শেখ কবির হোসেন’র খোঁজ মিলছে না। অভিযোগ রয়েছে- এই ১৪ কর্মকর্তার নামে যে অর্থ উত্তোলন করা হয়, তার একটি অংশ শেখ কবির হোসেনের পকেটে যায়।
একটি সাধারণ বিমা কোম্পানির সিইও বলেন, ১৪ জন অ্যাসিসট্যান্ট অফিসারের নামে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা বেতন-ভাতা তোলা সন্দেহজনক। ভুয়া কর্মকর্তাদের নামে কোম্পানি থেকে কোনো চক্র অর্থ উত্তোলন করছে কি না তা ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।
সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল হুদার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পওয়া যায়নি।
তবে কোম্পানি সচিব আবদুর রউফ গোমস্তা বলেন, আমরা কোনো ভুয়া কর্মকর্তার নামে বেতন-ভাতা উত্তোলন করিনি। এ ধরনের কিছু করা হলে অডিটে ধরা পড়তো।
এ বিষয়ে আইডিআরএ’র মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইডিআরএ’র ৪ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। চেয়ারম্যান আছেন, তিনি অফিস করছেন। সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স সংক্রান্ত অভিযোগ আমরা এখনো পায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post