এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্সের (এভসেক) সক্ষমতা বাড়লে বিমানবন্দরে থাকবে না এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুইঁয়া।
তিনি বলেন, বর্তমানে এভসেকের প্রায় দেড় হাজার সদস্য রয়েছে। আমরা সদস্য আরও বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো সদস্য থাকবে। তখন এয়ারসাইট ও আউটার সাইট সবদিকেই এভসেকের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা নিরাপত্তা সদস্য বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে যে আবেদন করেছি সেটি দ্রুতই অনুমোদন হবে। আমাদের সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা সহায়তা করছেন। আমরা খুব দ্রুতই আমাদের সক্ষমতা অর্জন করবো।
গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে শাহজালাল বিমানবন্দরের অ্যাপ্রন এলাকায় (অ্যাপ্রন এলাকা হলো যেখানে বিমান পার্ক করা হয়, লোড-আনলোড করা হয়, রিফুয়েল করা বা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়) থাকা এপিবিএনের কমান্ড সেন্টারটি দখলে নিয়ে সেটিকে নিজেদের অফিস বানিয়ে ফেলেছে এভসেক। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর এপিবিএনের পক্ষ থেকে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার জাকির হোসেন।
এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, এপিবিএনের সঙ্গে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা সেই বিষয়টিও দেখছি। আমাদের কোথাও কোনও সমস্যা নেই। বিমানবন্দরে ২৫/৩০টি সংস্থা কাজ করে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করেই নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করা হয়। পৃথিবীর সব বিমানবন্দরই এভিয়েশন সিকিউরিটির আওতায়। আমাদেরটাও থাকবে। এপিবিএন এই মুহূর্তে আউটসাইট নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছে।
এর আগে এপিবিএনের অধিনায়ক শিহাব কায়সার খান বলেছিলেন, অজ্ঞাত কারণে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। কী কারণে আমাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না সেটি জানি না।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বিমানবন্দরে আমাদের ২৪টিরও বেশি অর্গানাইজেশন কাজ করে। সবার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করানোর দায়িত্ব হলো সিভিল এভিয়েশনের। সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ‘সিভিল এভিয়েশন রেগুলাটরি ৮৪’ অনুসারে পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের কাজে কোথাও কোনও গ্যাপ নেই, ঝামেলা নেই। এপিবিএনের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা হয়েছে। এটি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং বাট যে ধরনের জিনিস এসেছে সে ধরনের কোনও কিছুই হয়নি।
তিনি বলেন, আমাদের তিন কিলোমিটারব্যাপী এয়ারপোর্টের এরিয়া, যা সবমিলিয়ে ৫/৬ কিলোমিটার। বহিরাঙ্গনের যে নিরাপত্তা সেটি তারা কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে এভিয়েশন সিকিউরিটিকে আরও শক্তিশালী করা। পৃথিবীর সব বিমানবন্দরেই এভিয়েশন সিকিউরিটি দায়িত্বপালন করে। আমাদের সক্ষমতা বাড়লে বিমানবন্দরে কর্মরত এপিবিএনসহ অন্যান্য কোনও বাহিনীই থাকবে না। আমাদের বর্তমান ১৫০০ এর বেশি এভিয়েশন সিকিউরিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। আমরা আরও সাড়ে তিন হাজার জনবল নিয়োগ দিতে যাচ্ছি। সবমিলিয়ে ৫ হাজারের মতো সিকিউরিটি কাজ করবে। এক সময় এভিয়েশন সিকিউরিটি পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্যরা চলে যাবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ছাত্ররা আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে এই নতুন বাংলাদেশ সঠিক রাস্তায়, সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। আমাদের কী করা উচিত বা কী করতে হবে, সেটি নিয়ে এগিয়ে যাবো। এখানে ব্যক্তি স্বার্থ বা ক্ষুদ্র গোষ্ঠী স্বার্থ বিবেচনা করা হবে না। সবার আগে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করা হবে। একটি দেশের বিমানবন্দর হলো দেশের দর্পণ। বিমানবন্দরে নামার পর যেন বুঝতে পারে আমি সুন্দর, সুশৃঙ্খল দেশে প্রবেশ করেছি। এ জন্য আমি বা আমরা কাজ করছি। যার যা কাজ তারা করছে। কোনও ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য যেন কিছুর ব্যাঘাত না ঘটে, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। আমাদের সবাই সহযোগিতা করছে। আমাদের মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আমাদের উপদেষ্টারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি আপনাদেরও সহযোগিতা চাই। সবার সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যাবো।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post