গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রী তাসলিমা খাতুনের সঙ্গে ‘আপত্তিকর অবস্থায়’দেখে আশরাফুল ইসলাম নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী আজিজুল হক। এ সময় স্ত্রীকেও কুপিয়ে আহত করেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার কাঁঠালি এলাকা থেকে আজিজকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার রাতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, ময়মনসিংহ জেলা ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের আজিজ মিয়া, টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার মো. হারুনুর রশিদ।
নিহত আশরাফুল ইসলাম ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার আসগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামে এসএস ফ্যাশন নামক একটি কারখানা পরিচালনা করতেন।
জানা গেছে, গতকাল সকালে আজিজ জানতে পারেন সকাল সাড়ে দশটার দিকে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক আশরাফুল তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে আসবে। পরকীয়া প্রেমিককে হাতে নাতে ধরতে বাড়ির পাশে একটি নির্মাণাধীন ভবনের বাথরুমে লুকিয়ে থাকেন তিনি। যথা সময়ে আশরাফুল আসেন তার স্ত্রীর কাছে। এ সময় ঘরে দরজা বন্ধ করে দুজনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করেন আজিজ। ক্ষিপ্ত হয়ে কেটে ফেলেন আশরাফুলের গোপনাঙ্গ। স্ত্রীর গোপনাঙ্গেও আঘাত করেন তিনি।
র্যাব ১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জুন্নুরাইন বিন আলম দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডে খবর পেয়ে র্যাব ১-এর একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠালী এলাকা থেকে আজিজকে গ্রেপ্তার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজ হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
র্যাবের কাছে আজিজ জানান, তিনি নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। গতকাল সকালে বাড়ির থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কাজে যান তিনি। কিছু দরকারি হাতিয়ার ভুলবশত বাসায় রেখে যাওয়ায় সেটি নিতে বাসায় আসেন তিনি। তিনি যখন বাড়িতে আসেন তখন ঘরের বাহির থেকে মোবাইলে স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক আশরাফুলের কথোপকথন শুনতে পান। এ সময় তার স্ত্রী তাসলিমা আশরাফুলকে সকাল সাড়ে ১০টায় বাসায় আসতে বলেন। মোবাইল ফোনে তার স্ত্রী আরও জানান, তার স্বামী দূরে কাজে চলে গেছেন। ফিরতে দেরি হবে। দশটার দিকে দুই সন্তান স্কুলে চলে যাবে। স্ত্রীর ফোনালাপ শুনে কাজে যাননি আজিজ। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে ধরতে বাসার কাছে একটি নির্মাণাধীন ভবনের বাথরুমে লুকিয়ে থাকেন তিনি। যথাসময়ে তার ঘরে প্রবেশ করেন আশরাফুল। পরে তারা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে আজিজ দরজায় ধাক্কা দেন। দীর্ঘসময় ডাকাডাকির পর দরজা খুলেন তাসলিমা। আজিজ ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন এবং উত্তেজিত হয়ে ধারাল বটি দিয়ে তার স্ত্রী ও আশরাফুলকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আশরাফুলের। মুমূর্ষু অবস্থায় তাসলিমাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আশরাফুল ইসলাম ওই গ্রামের এসএস ফ্যাশন নামক একটি কারখানা পরিচালনা করতেন। ওই কারখানায় শ্রমিকের চাকরি করতেন তাসলিমা। আশরাফুল ও তাসলিমা পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে এর আগেও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post