সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আইসিটি খাতে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। স্ত্রী, শ্যালকসহ স্বজনের নামেও গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এছাড়া রাজধানী ঢাকা এবং দেশের বাইরেও রয়েছে তার বিপুল সম্পদ।
নিজ এলাকা সিংড়া উপজেলাতেই দৃশ্যমান অনেক সম্পদ গড়েছেন পলক। এর মধ্যে বড় ছেলে অপূর্ব জুনাইদের নামে জামতলী-বামিহাল রাস্তাসংলগ্ন চওড়া গ্রামে লিটন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪২ বিঘা পুকুর ও আমবাগান কিনেছেন, যা চওড়া মৌজার দাগ নম্বর ১৯০, ১৯১, ১৯২, ১৯৩, ১৯৮, ১৯৯, ২০০, ২০১, ২০২, ২১১, ২১৪, ২১৫, ২৯৩, ৩০৮, ৩০৯, ৩৪৪, ৫৬২। মা জামিলার নামে সুকাশ ইউনিয়নে আগমুরশন গ্রামে হেদায়েতুল্যা প্রামাণিকের কাছ থেকে ৩৬ বিঘা পুকুরসহ বাগান কিনেছেন (খতিয়ান নম্বর ২০৮, জেএল নম্বর ১১৩, আগমুরশন মৌজার দাগ নম্বর ৭০২, ৭৯৬, ৭৯৭, ৭৯৮, ৭৯৯, ৮০০ ও ৮০১।
এর সাতটি দাগে ১২ একর ২৯ শতক জায়গার মধ্যে ১২ একরই জামিলার নামে কেনা)। সিংড়া পৌরসভার উপশহর এলাকায় স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা ও শ্যালক লুৎফুল হাবীবের নামে রয়েছে দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি পৃথক বিল্ডিং বাড়ি। শহরের মাদারীপুর ও চাঁদপুর রাস্তাসংলগ্ন এলাকায় স্ত্রীর নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ১৫ শতক মার্কেটের জায়গা কিনেছেন (কাটাপুকুরিয়া মৌজার দাগ নম্বর ৩৫১)।
থানা মোড় ও জোড়মল্লিকা এলাকায় শ্যালক রুবেলের নামে গড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। স্ত্রী কনিকা ও শ্যালকের নামে ইটভাটা ও গরুর খামার। তাছাড়া নিজের নামে কিনেছেন ভাই জুবায়ের আহমেদ নয়ন ও বোন ফাহমিদা আহমেদের বিল্ডিং বাড়ি এবং জয়বাংলা মোড়ের সিংড়া মৌজায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। জেলা সদরে নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের জায়গাসহ মা জামিলা বেওয়া, স্ত্রী কনিকা ও স্বজনদের নামে-বেনামে চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে ৫০০ থেকে ৭০০ বিঘা সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
সূত্রমতে, এছাড়া ঢাকা শহরেও বিভিন্ন নামে কোটি কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনেছেন। দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে পলক দম্পতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-গাড়ি রয়েছে বলে তার নিকটাত্মীয়রা জানিয়েছেন। নিজ এলাকা শেরকোল ইউনিয়নে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন পলক ও তার শ্যালক শেরকোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবীব রুবেল।
চওড়া গ্রামে ৪২ বিঘা পুকুর ও আমবাগান দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত রেজাউল করিম বলেন, ‘এখানে পুকুর, আমবাগান, যা কিছু দেখছেন সব প্রতিমন্ত্রী পলকের বলে এলাকাবাসী জানে। পুকুর লিজ নিয়ে মাছচাষ করছেন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিন। আমি এখানে দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছি।’ চওড়া গ্রামের গৃহিণী নাছিমা বেগম বলেন, একসময় পলককে এলাকায় ঠিকাদারি করতে দেখেছি।
পলককে গ্রেপ্তারের আগেই স্ত্রী কনিকা, তিন সন্তান ও শ্যালক দেশের বাইরে পাড়ি জমান। বিদেশে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পলকের স্ত্রী ফেসবুকে সংক্ষিপ্ত একটি ভিডিও ছেড়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য সঠিক নয়। বরং তিন ছেলে, শাশুড়ি ও প্রতিবন্ধী ননদকে নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার এ ভিডিওবার্তার সমালোচনা করেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post