৯ দিনের স্থগিতাদেশ কাটিয়ে আগামী ২৯ মে থেকে আবারও সৌদিগামী ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তবে টিকিট ইস্যুর জন্য যাদের ভিসার মেয়াদ আগে শেষ হবে, তাদের অগ্রাধিকার দেবে বিমান। ২৯ মে থেকে বিমানের সৌদি ফ্লাইট চালুর খবরটি আসে গতকাল রাতে।
এ সংবাদ শুনে সোমবার সকাল থেকেই মতিঝিলে বিমানের বলাকা কার্যালয়ে ভিড় করতে শুরু করেন সৌদি প্রবাসীরা। গত কয়েকদিন ধরে প্রবাসীদের বিমানের অফিসে ঢুকতে দেওয়া না হলেও সোমবার টিকেটপ্রত্যাশী সবাইকে কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়। পরে তাদের বিমানের টিকিট বণ্টনের প্রক্রিয়া জানিয়ে দেয় বিমান।
বিমানের বলাকা কার্যালয় জানায়, আগামী ২৯ তারিখ সৌদির দাম্মাম, রিয়াদ ও জেদ্দা রুটে বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এসব ফ্লাইটের টিকেট বিক্রিতে যাদের ভিসার মেয়াদ আগে শেষ তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিমান জানায়, যাদের ভিসার মেয়াদ আগামী ২৯, ৩০ এবং ৩১ মে শেষ হবে তাদের নতুন টিকেট আজ সোমবার ইস্যু করা হবে।
যাদের ভিসার মেয়াদ আগামী ১ থেকে ৪ জুন শেষ হবে তাদের আগামী ২৭ তারিখ বিমান অফিসে এসে টিকেট কাটতে হবে। আর ৫ তারিখে পর যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হবে তাদের আগামী ৩০ মে বিমান অফিসে গিয়ে টিকেট কেটে নিতে হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম-জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, ২০ মে থেকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনসহ নানা বিধিনিষেধের কারণে সৌদিগামী সব ফ্লাইট স্থগিত করেছিল বিমান। পরে হোটেল কোয়ারেন্টাইন প্যাকেজ সুবিধা নিশ্চিত করে আগামী ২৯ মে থেকে ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সৌদি সরকারের বিধিনিষেধ
সম্প্রতি এক আদেশে ২০ মে থেকে বাংলাদেশ থেকে সৌদিগামী প্রবাসী শ্রমিকদের প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটির সরকার। যারা করোনাভাইরাসের টিকা নেননি, তারা সৌদি আরবে প্রবেশ করলে সাত দিন হোটেলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে হোটেলের খরচ নিজেকেই বহন করতে হবে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, সে দেশে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এলেই কেবল ঢাকা থেকে যাত্রীরা ফ্লাইটে উঠতে পারবেন। সৌদিতে পৌঁছানোর পর আরও দু’বার করোনা পরীক্ষা করতে হবে। প্রথমবার পরীক্ষা করতে হবে সৌদি আরবে পৌঁছানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। ষষ্ঠ দিনে আবারও করোনা পরীক্ষা করা হবে। করোনা পরীক্ষা করার খরচ যাত্রীকেই বহন করতে হবে। দু’বার পরীক্ষা নেগেটিভ রিপোর্ট এলে হোটেলে কোয়ারেন্টাইন থেকে সপ্তম দিনে বাসায় যাওয়া যাবে।
এছাড়াও যারা পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ফাইজার-বায়োএনটেকের দুই ডোজ, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ, মডার্নার দুই ডোজ এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার এক ডোজ যারা নিয়েছেন তারা হোটেলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার বদলে বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার সুবিধা পাবেন।
প্রথমবারের মতো সৌদি প্রবাসীদের সে দেশে যাওয়ার আগে হেলথ ইন্স্যুরেন্স করাতে হবে। করোনা হলে ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা ব্যয় বহন করার বিষয়টি ইনস্যুরেন্সে স্পষ্ট থাকতে হবে। ভ্রমণ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে শাস্তি হিসেবে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছে সৌদি সরকার। এ সংক্রান্ত এক আদেশে বলা হয়েছে, কেউ যদি করোনাভাইরাস ছড়ায় তাকে ৫ বছরের জেল এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। যদি সেই ব্যক্তি প্রবাসী হন, তবে তাকে শাস্তি দেওয়ার পর সৌদি আরব থেকে বিতাড়িত করা হবে। তিনি আর কোনো দিন সৌদি আরবে আসতে পারবেন না।
আরো দেখুনঃ ওমানে যেভাবে করোনায় মৃত প্রবাসীদের দাফন করা হয়
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post