জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের উপর ইহুদীবাদ সন্ত্রাসী অবৈধ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে বৈঠকে বসেছে আরব আন্তঃ সংসদীয় ইউনিয়নের (এআইপিইউ)। শনিবার (১৫-মে) ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ৩১ তম জরুরি এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়ে। ফিলিস্তিনি জনগণকে সমর্থন, তাদের অধিকার আদায় এবং ইসরাইলি বাহীনির আগ্রাসন বন্ধের প্রতিবাদে এতে অংশ নেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানও।
অধিবেশনে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের উপর চালানো হামলার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরাইলের উপর চাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে ওমান। ওমানের পক্ষ থেকে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন মজলিস আল শূরার চেয়ারম্যান শাইখ খালিদ বিন হিলাল আল মাওয়ালি।
এদিকে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য অনুদান সংগ্রহ শুরু করেছে ওমান। অনিক (ONEIC) মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ৫১ হাজার ২১২ ওমানি রিয়াল অনুদান সংগ্রহ হয়েছে, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক কোটি টাকার বেশি সমপরিমাণ অর্থ।
অপরদিকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। শুক্রবার (১৪ মে) ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি বলেন, যারা গাজায় ইসরায়েলি রক্তপাতে নীরব কিংবা প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছেন, তাদের মনে রাখা উচিত—একদিন তাদের পালাও আসবে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বিশ্বকে আহ্বান জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, যদি গোটা বিশ্বও পাশ কাটিয়ে যায়, তবুও ইসরায়েলি নিপীড়ন মেনে নেবে না তুরস্ক।
বঙ্গবন্ধু কুইজ প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ সঠিক উত্তরদাতা একশত জনের তালিকা দেখুন এই লিংকে
http://www.probashtime.net/quiz/
উল্লেখ্য: সম্প্রতি পবিত্র রমজান মাসের পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে বিশেষ করে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে ন্যক্কারজনক হামলা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপক দমন অভিযান চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (১০ মে) তেল আবিবকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় হামাস।
সংগঠনটির বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে দমন অভিযান বন্ধ না হলে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ রকেট হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর এসব হামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের রকেট হামলায় ইসরাইলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে মুহুর্মুহু রকেট হামলার সময় সাইরেনের বিকট শব্দে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং প্রাণ বাঁচাতে ইসরায়েলিরা বেশির ভাগ সময় বাংকারে আশ্রয়কেন্দ্রে সময় কাটাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, একসময় ইসরায়েলি ট্যাংকের সামনে যে ফিলিস্তিনিরা শুধু পাথর নিক্ষেপ করে প্রতিবাদ জানাত আজ তাদের এই সামরিক সক্ষমতাকে দু’পক্ষের শক্তির ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে।
এরই মধ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস চার দিন আগে যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে সেই অভিযানের নাম তারা দিয়েছে ‘অপারেশন আল কুদস সোর্ড’। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও ইসরায়েল এরই মধ্যে গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে বহু ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং অবকাঠামো ধ্বংস করেছে কিন্তু এ যুদ্ধ ইসরায়েলের জন্যও খুব খারাপ পরিণতি ডেকে আনবে।
এদিকে হামাসের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তারা পুরনো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েই হামলা চালিয়েছেন। এখনো নতুন ক্ষেপণাস্ত্র তারা বেরই করেননি। এদিকে এমন মন্তব্যের পর পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এতে বোঝায় যাচ্ছে তাদের প্রচুরসংখ্যক রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত রয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে ইসরায়েল গাজার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ দিয়ে রেখেছে, তবুও হামাস সামরিক খাতে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে ইসরায়েলের জন্য তা বিরাট হুমকি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post