পেডিংটন ভালুক শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ পাসপোর্ট পেয়েছে। পেরু থেকে লন্ডনে আসার ৬৬ বছর পর এই পাসপোর্ট পেল সে। তবে খুব বেশি দূর ভ্রমণের সুযোগ তার থাকছে না। কেন?
গত শতাব্দীর দুই তৃতীয়াংশ ধরে সে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্বাস্তু। তবে তার কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই। ব্রিটিশ সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের এক চরিত্র ভালুকটি। ১৯৫৮ সালের ১৩ অক্টোবর ব্রিটিশ লেখক মাইকেল বন্ডের ‘এ বিয়ার কলড পেডিংটন’ নামের বইয়ের মাধ্যমে এর আত্মপ্রকাশ।
পেরুর এই ভালুকের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাতারা একটি পাসপোর্টের অনুরোধ করেছিলেন। আগামী মাসে, অর্থাৎ নভেম্বরে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র ‘পেডিংটন ইন পেরু’র প্রচারণায় ব্যবহারের জন্য এটা চেয়েছিলেন তাঁরা।
চলচ্চিত্রটির সহপ্রযোজক রব সিলভা রেডিও টাইমসকে জানান, তাঁরা একটি রেপ্লিকা চেয়েছিলেন, এর বদলে অফিশিয়াল বা সরকারি একটি পাসপোর্ট পেয়ে গেছেন।
তবে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে, এটি একটি নমুনা বা প্রতীকী পাসপোর্ট। অর্থাৎ সত্যিকার অর্থে ব্যবহারের জন্য নয়।
আপনিই বলুন একটি চরিত্রের কি আর এটি সত্যিকারের ব্যবহারের সুযোগ আছে?
‘আবার ভাববেন না যেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের পেছনে হাস্যরস বা কৌতুক কাজ করেছে। বরং সরকারি পর্যবেক্ষণের অধীনে তারা তাকে শুধু ভালুক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।’
ভালুক চরিত্রটির জন্ম দেওয়া মাইকেল বন্ড বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিজের শৈশবের স্মৃতিতে উৎসাহিত হয়ে তিনি জন্ম দিয়েছেন সবার ভালোবাসার ‘অন্ধকার পেরু’র ভালুকটিকে।
এখন বলে রাখা ভালো, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর রাজধানী লিমা। আর উঁচু সব পর্বত ও গহিন জঙ্গলে আবৃত এক কাল্পনিক এলাকা ‘ডার্কেস্ট পেরু’ বা অন্ধকার পেরু। তবে অনেকেরই অনুমান এই জায়গাটির বাস্তব অস্তিত্ব আছে। আর এর অবস্থান পূর্ব পেরুতে, যেখানে বিখ্যাত আমাজন জঙ্গলের একটি অংশ পড়েছে।
বন্ড ২০১৭ সালে বিবিসিকে বলেন, ‘যখন আমি ছোট ছিলাম, তখনকার যে স্মৃতি সবচেয়ে বেশি আলোড়িত করে সেটি, লন্ডন থেকে শিশুদের গলায় একটি লেবেল ঝুলিয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। তাদের সব সম্পত্তি থাকত একটি স্যুটকেসের ভেতরে। আর পেডিংটনকেও এভাবেই তুলে ধরেছি।
‘পেডিংটন বিয়ার এক উদ্বাস্তু, যার গলায় ঝোলানো কাগজে লেখা, “দয়া করে ভালুকটির খেয়াল রাখবেন। ধন্যবাদ।” আর তার সঙ্গে মালপত্র বলতে কেবল একটি ছোট স্যুটকেস।’ বলেন বন্ড।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে লুকিয়ে একটি নৌকায় করে এসে ব্রাউন পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করে ভালুকটি। লন্ডনের যে ট্রেন স্টেশনে তাকে পাওয়া যায়, সেটার নামে ভালুকটির নাম দেয় তারা পেডিংটন।
বন্ডের বইগুলো অবলম্বনে বানানো সফল চলচ্চিত্রগুলোতে পেডিংটনের কণ্ঠ দিয়েছেন বেন উইশো। ভালুকটিকে নিয়ে তৈরি করা তৃতীয় চলচ্চিত্র ‘পেডিংটন ইন পেরু’ যুক্তরাজ্যে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আসছে নভেম্বরে। যুক্তরাষ্ট্রে এটি মুক্তি পাবে আগামী বছরের জানুয়ারিতে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post