করোনা মহামারির প্রভাব কেটে গেলে অবৈধ পথে টাকা লেনদেন আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে। এতে টানা বাড়তে থাকা রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আবার কমতে পারে। তাই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব করেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, বৈধ পথে প্রবাসী আয়ের ধারাটি অব্যাহত রাখতে পারলে এবং আরও বেগবান করতে পারলে রেমিট্যান্স প্রবাহের বর্তমান ধারা অদূর ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তাই প্রবাসীদের উৎসাহী করতে বিদ্যমান ২ শতাংশের প্রণোদনা বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করা যেতে পারে। এ খাতে সরকারের অতিরিক্ত ৪ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এটি সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ব্যয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রবাসীদের বৈধ পথে টাকা পাঠানোর উৎসাহ ধরে রাখতে হবে। তাই সরকার যদি প্রস্তাবটি বিবেচনা করে, তাহলে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধির প্রবাহ অব্যাহত থাকবে। প্রণোদনা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে গত ২৮ এপ্রিল চিঠি দিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
চিঠিতে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী উল্লেখ করেন, করোনার সময়েও প্রবাসী কর্মীদের কষ্টার্জিত আয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ সচল আছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ বছর এটি ৩৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে এটি আরও ২০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।
প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ প্রণোদনার প্রস্তাব করে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী।
* প্রবাসী আয় ৩৫% বাড়তে পারে এ বছর। আগামী বছর ২০% বাড়ার সম্ভাবনা।
* হুন্ডি চালু হলে কমতে পারে প্রবাসী আয়।
* প্রণোদনায় ভর্তুকি লাগবে ৪ হাজার কোটি টাকা।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২ শতাংশ প্রণোদনাকে মহামারির মধ্যেও প্রবাসী আয় বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই প্রবৃদ্ধির আরও বিভিন্ন কারণ ও ব্যাখ্যা দিয়েছে। তবে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোকেই প্রধান কারণ মনে করছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। বৈধ পথে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনা যে ব্যাপক উৎসাহিত করেছে, তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গমনাগমন ও আমদানি কমে যাওয়ায় হুন্ডি ব্যবসা কমে গেছে। ফলে বৈধ পথে টাকা পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন প্রবাসী কর্মীরা।
প্রণোদনা বাড়ানোর প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, রামরু আরও আগেই এ দাবি জানিয়েছে। এটা নাগরিক সমাজের দাবি। এটি অবশ্যই কার্যকর হওয়া দরকার। আগামী বাজেটে এ দাবি আদায়ে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post