সরকার পতনের পর থেকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের টাকা লেনদেনে জটিলতা শুরু হয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও স্বাভাবিক হয়নি লেনদেন। ফলে টাকা না পেয়ে চাঁদপুরে ব্যাংকটির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন গ্রাহকরা। এর দুই ঘণ্টা পর পুলিশের সহযোগিতায় তালা খুলে ব্যাংকের কর্যক্রম স্বাভাবিক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্স ভবনে টাকার জন্য চেক নিয়ে গ্রাহকরা জড়ো হন। এ সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা লেনদেন বন্ধ রাখলে উত্তেজিত গ্রাহকরা প্রবেশ গেটে তালা লাগিয়ে দেন। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে প্রধান কার্যালয় থেকে টাকা আনা হয়।
এদিকে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া এসে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা গেছে, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চাঁদপুর জেলা শাখার গ্রাহক সংখ্যা ২২ হাজার। বর্তমানে ১০০ গ্রাহকের টাকাও দিতে পারছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন শাখায় টাকা সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা।
গ্রাহক ইয়াকিন খান ও শাহনাজ বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাংকে এসে টাকা নিতে পারছি না। ব্যাংকে আসলে তারা বলেন, ‘সামনের সপ্তাহে আসেন ঠিক হয়ে যাবে’। আজকে এসে দেখি, কোনো টাকা দিচ্ছেন না। সব গ্রাহকরা জড়ো হয়ে গেটে তালা দিয়েছে। আমরা আমাদের টাকা চাই।
ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মাহবুব আলম বলেন, রোব ও সোমবার লেনদেন চালু ছিল। ওইদিন গ্রাহকদের সাধ্যমতো টাকা দিতে পারিনি। আজ ব্যাংকের পুরোপুরি লেনদেন বন্ধ রাখা হয়। যার কারণে গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাইরে দিয়ে তালা মেরে দেন। আমরা প্রধান কার্যালয়ে কথা বলেছি, তারা টাকা পাঠিয়েছেন। বর্তমানে গ্রাহকদের ৫-১০ হাজার টাকা করে দিচ্ছি। আমি গ্রাহকদের বলবো, আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন। ধৈর্য ধরলে ব্যাংক অবশ্যই আগের মতো দাঁড়িয়ে যাবে। ব্যাংকের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে প্রায় দুই থেকে তিন মাস সময় দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আগের থেকে এখন গ্রাহকদের চাহিদা বেড়েছে। আমরা গ্রাহকদের পাওনা ঋণের টাকা এবং প্রধান কার্যালয় থেকে আনা টাকা দিয়ে তাদেরকে টাকা দিচ্ছি। ওই সময় প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, ব্যাংকটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে ব্যাংকের ম্যানেজার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কিছু টাকা আনার ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি যে টাকা আসবে, তা দিয়ে গ্রাহকদের আপাতত সন্তুষ্ট করা যাবে। এখন ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post