ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে ইফতারের কিছুক্ষণ আগে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে রোজাদাররা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা আজান শুনে অনেক রোজাদার ইফতার করে ফেলছেন। তাই রোজাদার এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে আজান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিজ্ঞাপনের চরম বিরোধিতা করে বিজ্ঞাপন বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন বেসরকারি ভোক্তা অধিকার সংস্থা “কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি” (সিসিএস)। রবিবার (২৫ এপ্রিল) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ে এ সম্পর্কিত লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়। সংস্থাটির পক্ষে আবেদনটি করেছেন নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
আবেদনে বলা হয়েছে, “মাল্টিব্রান্ডস লিমিটেড” তাদের পণ্য “ট্যাং জুস”-এর একটি বিজ্ঞাপনে ইসলাম ধর্মের পবিত্র আজানের ধ্বনি (আল্লাহু আকবর) যুক্ত করে বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচার করছে। বিজ্ঞাপনটি বিশেষ করে ইফতারের কিছুক্ষণ আগে থেকে বেশি প্রচারিত হয়। এতে লাখ লাখ সম্মানিত রোজাদার যারা টেলিভিশনে আজান শুনে ইফতার করেন তারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
এতে আরও বলা হয়, ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতে হয়। সাধারণ মানুষ আজানকে ইফতারের সময় হিসেবেই জানে। এজন্য সঠিক সময় নির্বাচনে টেলিভিশনে প্রচারিত আজানকে বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে সাধারণ মানুষ। কিন্তু আজানের ঠিক কিছু সময় আগে থেকে এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করায় মানুষ বিজ্ঞাপনটিকে আজান মনে করে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। বহু মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ইফতারের সময়ের আগেই ইফতার করে ফেলছে।
সংস্থাটি জানায়, শুধু বাণিজ্যিক স্বার্থে কয়েক কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের পবিত্র ইবাদত নিয়ে এমন হীন কার্যক্রমের বিষয়ে ভোক্তা সাধারণের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আজানের ধ্বনিযুক্ত বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে আজানের ধ্বনি ব্যবহার করে সেই বিজ্ঞাপন ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে টিভিতে প্রচারের বিরোধিতা করেছেন অনেকেই। তারা মনে করছেন, ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে এমন বিজ্ঞাপন রোজাদারদের সঙ্গে ব্যঙ্গ করার মতো। কেউ কেউ এটাকে বিবেকহীন কাণ্ড আখ্যায়িত করে বলেন, এতে বিভ্রান্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের পূর্বে একজন রোজাদার আজানের জন্যই অপেক্ষা করতে থাকেন। তখন স্থানীয় মসজিদগুলোতে মাগরিবের আজান এবং টিভিতে মাগরিবের আজান ছাড়া অন্য যে কোনো আজান প্রচার করা বিবেকবান মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, এটা নীতিহীন কাণ্ড।
ইসলামী চিন্তাবিদরাও এমন বিজ্ঞাপনের বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেন, বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। আর আজানকে কোনো ব্যবসায়িক কারণে ব্যবহার করা কোনোভাবেই উচিত নয়। ট্যাং আজানকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনার সঙ্গে বিদ্রূপ করেছে। আর সেই বিজ্ঞাপন ইফতারের পূর্বে প্রচার করা রোজাদারদের রোজা ভঙ্গের কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। যেসব রোজাদার বিজ্ঞাপনের এই আজান শুনে রোজা ভেঙ্গেছেন, তাদের রোজা ভঙ্গের সব দায় ট্যাং কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তায়।
আপনার মন্তব্য: