ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। কীভাবে সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়েছে? তা-ই বিশদে জানিয়েছে ইসরাইলের ন্যাশনাল সেন্টার অফ ফরেনসিক মেডিসিনের প্রধান প্যাথলজিস্ট।
তিনি জানান, মাথায় গুলি করে সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়। এর পর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কেটে নেয়া হয় তার ডান হাতের আঙ্গুল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনওয়ার হত্যা নিশ্চিত করতে তার হাতে আঙুল কেটে দেন ইসরাইল সেনারা। পরে সেই আঙুল দিয়ে তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ইসরাইলি বাহিনীর কাছে আগে থেকেই সিনওয়ারের ডিএনএর নমুনা ছিল, কারণ তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশটির কারাগারে বন্দী ছিলেন।
ইসরাইল ন্যাশনাল সেন্টার অব ফরেনসিক মেডিসিনের প্রধান প্যাথলজিস্ট চেন কুগেল সিএনএনকে জানান, ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মরদেহটি সিনওয়ারের। প্রথমে সেনারা তার দাঁত দেখে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু এর মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সিনওয়ারের মাথায় গুলির আঘাত ছিল।
চেন কুগেল আরও জানান, হামাস নেতার গায়ে একটি ট্যাঙ্কের গোলার আঘাত ছিল। কিন্তু মাথায় লাগা গুলিতে তার মৃত্যু হয়।
ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার একটি ভিডিও এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, দুই ইসরাইলি সেনা একটি লাশের (যাকে ইয়াহিয়া সিনওয়ার বলে দাবি করা হয়েছে) বাম হাতের তর্জনি কেটে ফেলছে।
সিএনএন ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানায়, প্রথমে মরদেহের বাম হাতের পাঁচটি আঙুল থাকলেও পরে একটি আঙুল কম দেখা গেছে।
সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর ঘোষণা দিয়ে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স জানায়, অন্যান্য দিনের মতোই বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাতেও গাজার দক্ষিণাঞ্চলের তাল আল সুলতান এলাকায় টহলে বের হয়েছিলেন ইসরাইলি সেনারা। এ সময় তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যা করে সেদিনকার মতো ফেরত যান সেনারা। পরদিন সকালে নিহতদের পরীক্ষা করতে এলে তাদের একজনের সঙ্গে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মিল খুঁজে পান তারা। পরিচয় নিশ্চিত করতে তার দেহের একটি নমুনা পাঠানো হয় ইসরাইলে। পরবর্তীতে পরিচয় নিশ্চিত করে তার মৃতদেহ ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হয়।
আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির দাবি, পরিচয় না জেনেই হত্যা করা হয়েছে সিনওয়ারকে। ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল না। ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, মৃত্যুর আগে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দালানে আহত অবস্থায় বসে ছিলেন তিনি। তবে তার অবস্থান নিশ্চিত করতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কাজ করছিল তাদের ইন্টেলিজেন্স টিম। অর্থাৎ সিনওয়ার যে রাফার কোনো জায়গায় গোপনে আছেন, সে বিষয়ে ধারণা ছিল ইসরাইলি বাহিনীর।সিনওয়ার নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হামাসও।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটির গাজা অঞ্চলের প্রধান খলিল আল হায়া বলেন, ইয়াহিয়া সিনওয়ার গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post