সাবেক রেলমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পাওয়া মুজিবুল হক বয়োবৃদ্ধ ছিলেন। এছাড়া নানা রোগে আক্রান্ত রেলমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বসহ দৈনন্দিন কাজও ঠিকমতো করতে পারতেন না। এর সুযোগ নেন তার পিএস কিবরিয়া। তিনি হয়ে ওঠেন মন্ত্রণালয়ের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রকারী। সত্তরোর্ধ মুজিবুল হকের সঙ্গে কিবরিয়ার কথিত বান্ধবী হনুফা আক্তার রিক্তার বিয়ে হয়। মন্ত্রীর এমন অসম বিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনার ঢেউ তোলে। এসব নিয়ে খোদ রেল ভবনেও নানা মুখরোচক গল্প ছড়ায়। কেউ কেউ বলেন, মন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কিবরিয়া পরিকল্পিতভাবে বান্ধবীর সঙ্গে মন্ত্রীর বিয়ের বন্দোবস্ত করেন।
জানা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ছেলে কিবরিয়া সংসদ সচিবালয়ের একজন সাধারণ কর্মচারী ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত এমপি মুজিবুল হককে রেলমন্ত্রী করা হলে কিবরিয়াকে একান্ত সচিব (পিএস) নিয়োগ করেন। টানা প্রায় আট বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এতেই কপাল খুলে যায় তার। পিএস পদ কাজে লাগিয়ে কমিশন বাণিজ্য ও নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এ সময় তার বিরুদ্ধে রেলের বড় বড় ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও অনিয়ম দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের আশীর্বাদে তার কিছুই হয়নি।
বয়োবৃদ্ধ রেলমন্ত্রী সব কাজেই ভরসা করতেন পিএস কিবরিয়ার ওপর। এমনকি মন্ত্রণালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে গেলে মুজিবুল হক নিজেই তার পিএস কিবরিয়ার সঙ্গে পরামর্শের নির্দেশ দিতেন। ফলে কিবরিয়ার সিদ্ধান্তের বাইরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তেমন কিছুই করার ছিল না। তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন মন্ত্রণালয়ের বহুল আলোচিত কালোবিড়াল নামে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় কিবরিয়া মজুমদারকে শনিবার রাতে কসবা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। এ ঘটনায় বিজিবির নায়েব সুবেদার সফিউর রহমান বাদী হয়ে পাসপোর্ট আইনে মামলা করেছেন। তাকে রোববার ঢাকার পল্টন থানার একটি হত্যা মামলা ও কসবা থানার পাসপোর্ট মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post