শনিবার বিমানের টিকেট কাটার পরও দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ করিমের (২৫) বাড়ি ফেরার কথা ছিল। প্রিয়জনদের জন্য কেনাকাটা করা, ব্যাগ গোছানো, বিমান টিকেট সবই তৈরি ছিল। কিন্তু তার আগেই বৃহস্পতিবার সকালে চির ঘুমে চলে গেলেন তিনি।
মোহাম্মদ করিমের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার রোসাংগিরি ৮ নম্বর ইউনিয়নের মনুর বাড়ি। বাবার নাম মোহাম্মদ ইউনুস। বাবা-মার ৫ সন্তানের মধ্যে করিম চতুর্থ।
মোহাম্মদ করিমের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ সায়মন গণমাধ্যমকে জানান, তার ভাই দুবাইয়ের রাস আল খোর এলাকায় এক বাংলাদেশি মালিকানাধীন গ্রোসারিতে সেলসম্যানের কাজ করতেন। দুবাই আসার দীর্ঘ ৪ বছর পর তিনি দেশে যাওয়ার জন্য শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার ইউএস বাংলার ফ্লাইটের টিকেট করেন। বাড়ি যাওয়ার এবং পরিবার পরিজনদের জন্য কেনাকাটার সুবিধার জন্য তিনি ১ অক্টোবর থেকে সিটির দেরা দুবাইয়ে তার বন্ধু আকবর হোসেনের রুমে অবস্থান করছিলেন।
সায়মন জানান, এই কক্ষটিতে বুধবার সকালে ছাড়পোকা তাড়ানোর কীটনাশক পাউডার ছিটানো হয়েছিল। কীটনাশক ছিটানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারো রুমে অবস্থান নিরাপদ নয় বলে করিম রুমের অন্যান্যের মত রাতে বাইরে অবস্থান করেন। সারাদিন ও সারারাত নির্ঘুম কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি রুমে ফিরে আসেন এবং ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বন্ধু আকবর রুমে এলে করিম তাকে বলেন, যে তার খারাপ লাগছে, তার জন্য একটা ডাব ও ওরাল স্যালাইন নিয়ে আসতে। আকবর গ্রোসারির ডেলিভারি বয়কে দিয়ে তা রুমে পাঠান। সাড়ে ১০টার দিকে আকবর রুমে ফিরে এসে কুশল জিজ্ঞাসা করার জন্য করিমকে বারবার ডেকে সাড়া না পাওয়ায় কাছে যেয়ে তাকে সংজ্ঞাহীন পড়ে থাকতে দেখেন এবং পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ও প্যারামেডিকরা এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মৃতদেহ নায়েফ পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যান।
স্থানীয়রা কেউ কেউ ধারণা করছেন যে কীটনাশক এর বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে দুবাই পুলিশের কাছ থেকে সোমবার নাগাদ ফরেনসিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post