পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের দেশ লেবানন এই মুহূর্তে সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তবে তিনি এ ও বলেছেন যে এখনও এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, আমি বেশ কয়েক মাস ধরে বলছি যে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে এবং দিন যতো যাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। লেবানন এই মুহূর্তে সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। সেখানে সংঘাত ঘনীভূতও হচ্ছে; কিন্তু এখনও সম্ভাব্য যুদ্ধ থামানোর মতো সুযোগ রয়েছে। যদি আমরা সব দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি, তাহলে এখনও এই পরিস্থিতির উত্তরণ সম্ভব।
ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের দ্বন্দ্ব মূলত সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে ঘিরে। ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ লেবাননভিত্তিক হলেও লেবাননের মূল ক্ষমতা কাঠামোতে সরাসরি কোনো অংশগ্রহণ নেই গোষ্ঠীটির, বরং ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এমনিতে বিগত দশকগুলোতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বিচ্ছিন্নভাবে হামলা পরিচালনা করলেও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলা এবং তার জবাব হিসেবে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে। গাজায় ইসরায়েলি অভিযান শুরু হওয়ার পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে সীমান্তের অপর প্রান্তে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে ইসরায়েলও। উভয় পক্ষের এই রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময়ের জেরে এক বছরে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।
বিমান অভিযান পর্বের পর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী। এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। তবে কতদিন এ অভিযান চলবে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা ইঙ্গিত এখনও দেয়নি আইডিএফ।
ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি বাহনীর অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ১ হাজার ৫ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে স্থল বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে। এই নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক লোকজন, নারী ও শিশু।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post