বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদ তৈরি হলে ভারতের যারা উগ্রবাদী রয়েছে, তাদের জন্য সহায়ক হয়। সেই জায়গা থেকে এই অপপ্রচার চালানো হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ভারতীয় দুটি সংবাদমাধ্যমের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যুত্থান নিয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। এসময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে নিয়ে ভারতের দুটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
রোববার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘দ্য ক্রস বর্ডার স্প্রেড অব মিসইনফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আপনারা দেখবেন, আমাদের এই আন্দোলনের অন্যতম একজন মাহফুজ আলমকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। ভারতের পত্রিকা ইকোনমিক টাইমস কোনো ধরনের তথ্যপ্রমাণ ছাড়া তাকে হিজবুত তাহরীর সদস্য হিসেবে অভিহিত করে। আমরা দেখলাম, সেই একই সুর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিফলিত হয়েছে। একই সুরে কথা বলছেন তসলিমা নাসরিন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বিষয়টিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে হিজবুত তাহরীর তৎপরতা নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভারতের ইকোনমিক টাইমস। মাহফুজ আলমের বিরুদ্ধে হিজবুত তাহরীর প্রতি আনুগত্য থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে তাতে উল্লেখ করা হয়। আবার প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদনেও মাহফুজ আলমের বিরুদ্ধে হিজবুত তাহরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগের উল্লেখ করা হয়।
মাহফুজ আলম অবশ্য হিজবুত তাহরীর বা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুক্ত নন বলে আগেই স্পষ্ট করেছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপনের একটি প্রচারণা চলছে। বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অপপ্রচার সেলগুলো এটা করছে যে আমি ইসলামি বা জঙ্গিবাদী রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম, বিশেষ করে হিজবুত তাহরীর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি যুক্ত ছিলাম না!
হিজবুত তাহরীর ও অন্যান্য অগণতান্ত্রিক গোষ্ঠীর আদর্শের বিপক্ষে ছিলেন এবং এখনো আছেন উল্লেখ করে মাহফুজ আলম ওই পোস্টে আরও লেখেন, আমি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম না। আমি তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করি নাই। বিশ্ববিদ্যালয়–জীবনের প্রথম বর্ষে আমার কাছে তারা এসেছে এবং তাদের কর্মসূচিতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ নিয়ে তাদের আদর্শগত লক্ষ্যের সঙ্গে আমি একমত ছিলাম না।
এ বিষয়ে আজকের আলোচনায় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মাহফুজ আলম বৈশ্বিক মঞ্চে দাঁড়ালেন এবং আন্দোলনকে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত করালেন, তখন থেকেই এই অপপ্রচার ছড়ানোর বিষয়টি বেশি করে হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post