বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ তাঁদের পরিবারের আট সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) রোববার বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশনা দিয়েছে।
ব্যাংক হিসাব জব্দের তালিকায় থাকা অন্যরা হলেন আহমেদ আকবর সোবহানের চার ছেলে সাদাত সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সায়েম সোবহান আনভীর ও সাফওয়ান সোবহান এবং তিন পুত্রবধূ সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান, সাবরিনা সোবহান ও ইয়াশা সোবহান।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসব হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাঁদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
লেনদেন জব্দের পাশাপাশি আহমেদ আকবর সোবহান এবং তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। সেখানে বলা হয়েছে, তাঁদের ব্যাংক হিসাবসংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি), চলমান ঋণের তথ্য (গ্রাহকের নাম, ঋণের হিসাব নম্বর ও বর্তমান স্থিতি, শ্রেণীকৃত মান প্রভৃতি), অপ্রত্যাশিত আমদানি বা রপ্তানি বিলের তথ্য এবং লকার সম্পর্কিত তথ্য দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
জুলাই–আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিল্পগোষ্ঠীটির চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান তখনকার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন জানান।
৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের চার দিন আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপকে দুই বছর ঋণ পরিশোধ না করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকে থাকা ঋণের জন্য গ্রুপটি এই সুবিধা পেয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ন্যাশনাল ব্যাংকে বসুন্ধরা গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে সরাসরি ঋণ ৩ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই মাস আগে জ্বালানি তেল নিয়ে বসুন্ধরাকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বেসরকারি খাতে জ্বালানি তেল বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয় বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানিকে। দেশে বর্তমানে জ্বালানি তেল আমদানি ও সরবরাহ করে একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
বিশেষজ্ঞ ও ভোক্তা অধিকারকর্মীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের ব্যবসা বেসরকারি খাতে দেওয়া হলে মানুষকে তা বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে, যেটা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে।
এদিকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের (মানি লন্ডারিং) অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ৫ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি এ কথা জানায়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post