দেশে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় চলছে এক সপ্তাহের লকডাউন। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নতুন করে জারি হওয়া বিধিনিষেধে ব্যবসা নিয়ে আবারো অনিশ্চয়তায় পড়েছেন রেস্তোরাঁ মালিকরা। এ অবস্থায় চলমান বিধিনিষেধের সময় আরো বাড়ানো হলে ধারণক্ষমতার অর্ধেক ক্রেতা বা ভোক্তা স্বাভাবিক সময় পর্যন্ত হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসিয়ে খাওয়ানোর সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। মঙ্গলবার (৬-এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক সংকট কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কমাতে সরকার গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে, যা রেস্তোরাঁ মালিকরা সে সময় মেনে চলেন। পরে সাধারণ ছুটি প্রত্যাহারপূর্বক সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শিল্প-কলকারখানা, গণপরিবহন, শপিংমল, দোকান, ব্যাংক-বীমা, সরকারি কাজের ঠিকাদার, জরুরি সেবাগুলো বিষয়ে আলাদাভাবে বিধিনিষেধ দিয়ে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু হোটেল-রেস্তোরাঁ তথা খাদ্য সেবা শিল্পে তেমন কোনো গুরুত্ব না দিয়ে ঘোষণার পরও হোটেল-রেস্তোরাঁ কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের চলতি মূলধন হিসেবে ব্যাংকঋণ দেয়া হয়নি।
গত বছরের বিধিনিষেধের সময় নিজেদের ক্ষতির বিষয়টি উল্লেখ করে সংগঠনটি দাবি করছে, গতবারের বিধিনিষেধে ৩০ শতাংশ হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। অনেক মালিক সর্বস্বান্ত হয়ে প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দিয়েছেন। মালিকদের গড়ে ৫০ শতাংশ লোকসান হয়েছে। গত রমজানে হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতে কোনো ব্যবসাই হয়নি। হোটেল-রেস্তোরাঁয় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ লাখ শ্রমিক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থার মধ্যেই করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার আবারো বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
করোনার লাগাম টেনে ধরতে সরকারের চলমান বিধিনিষেধের বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। তারা বলছে, বর্তমান বিধিনিষেধের আওতায় খাবারের দোকান তথা হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থায়ই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
তবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দিনব্যাপী আমাদের হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে পার্সেল এবং ডেলিভারির সময়সীমা উল্লেখ না থাকায় একেক জেলায় বা বিভাগীয় শহরে প্রশাসনিক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একেক ধরনের ব্যাখ্যা করছে। এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে অনুরোধ সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আপাতত হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে যেন আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে শুধু পার্সেল ডেলিভারি করতে পারি।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি বলছে, অনলাইন ডেলিভারির সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিশন পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মতো সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করতে হবে। অন্যথায় অনলাইন ডেলিভারির জন্য রেস্তোরাঁর ব্যবসা ৫০ শতাংশ ক্যাপাসিটিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করতে চায় তারা। কারণ হিসেবে তারা বলছে, পরপর দুই বছর হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ। এ অবস্থায় সহজ শর্তে বিনা জামানতে এসএমই খাতে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছে তারা। এছাড়া আসন্ন রমজানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতার ও সেহরি বিক্রি করতে চান উল্লেখ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post