রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ ও আধাদক্ষ জনশক্তি মালয়েশিয়ায় পাঠাতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বঙ্গভবনে শুক্রবার বিকালে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনশক্তি রপ্তানির গন্তব্য। আগামীতে যাতে আরও দক্ষ জনশক্তি মালয়েশিয়ায় যেতে পারে, সে বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার অত্যন্ত গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশি জনশক্তি মালয়েশিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে জানিয়ে তিনি মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিতের ওপর জোর দেন।
সংক্ষিপ্ত সফরে শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টায় ঢাকায় আসেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় আনোয়ার ইব্রাহিমকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী, পরিবহন উপমন্ত্রী, ধর্ম বিষয়ক উপমন্ত্রী, দুইজন সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ আরও কিছু প্রতিনিধি আসেন।
বিকালে আনোয়ার ইব্রাহিম বঙ্গভবনে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি। সাক্ষাতে তারা মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
চলতি বছর নতুন-পুরাতন বিদেশি কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিমানের টিকেট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে ওই সময়ের মধ্যে যেতে পারেননি প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যেতে না পারা এই কর্মীদের নিতে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় এসে সরকারের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার কথাই বলেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
জনশক্তি নিয়ে আলোচনা ছাড়াও বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে মালয়েশিয়ায় সহযোগিতা চান। পরে আনোয়ার ইব্রাহিম কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামীতে ‘নতুন উচ্চতায়’ পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। সাক্ষাতকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বিশেষ করে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, শ্রমবাজার এবং রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
আসিয়ানের সভাপতি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাংলাদেশ আশিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে আগ্ৰহী।
মালয়েশিয়া এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতের পর বঙ্গভবনে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post