বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন আরও ৭৯০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১ হাজার ৭১৯ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮৬ জনে।
বুধবার (৬ মে) দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ হাজার ৭৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে পরীক্ষা করা হয় ৬ হাজার ২৪১টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৯৯ হাজার ৬৪৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৭৯০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এটি গতকালের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১ হাজার ৭১৯ জন।
নাসিমা সুলতানা আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮৬ জনে। নতুন করে মারা যাওয়াদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী, দুজন ঢাকার এবং একজন ঢাকার বাইরের, দুজন ষাটোর্ধ এবং একজন চল্লিশোর্ধ্ব।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৫ মে) দেশে রেকর্ড সংখ্যক ৭৮৬ জন করোনা রোগী শনাক্তের কথা জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন বুলেটিনে। এছাড়া আরও একজনের মৃত্যুর খবরও জানানো হয়। সেই সঙ্গে জানানো হয়, আরও ১৯৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ওমানে করোনা আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে।পঞ্চম দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয়েছে আগামী ৫ মে পর্যন্ত। তার আগেই আরেক দফা ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে। যার প্রজ্ঞাপন এখনও জারি করা হয়নি। বলা হচ্ছে, এ দফায় ছুটি বাড়িয়ে ১৫ কিংবা ১৬ মে পর্যন্ত করা হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের পদক্ষেপ অনেকটা এ রকমই। তবে এর মাঝেও কিছু কিছু দেশ তাদের দেয়া লকডাউন কিছুটা শিথিল করছে। স্পেন, জার্মানি ও ভারত সেই পথে হেঁটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিও তেমনটাই ভাবছে।
আরও পড়ুনঃ প্রবাসীদের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী বুধবার (৬ মে) সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৩৮ জন। এছাড়া এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ৮০২ জনের শরীরে। এরইমধ্যে ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস।
আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ লাখ ৪২ হাজার ৩৪৭ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৭ জন। এদের মধ্যে ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৯ জনের শরীরে মৃদু সংক্রমণ থাকলেও ৪৯ হাজার ২৪৮ জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৭ মে) থেকে শর্তসাপেক্ষে দেশের সব মসজিদ খুলে দেয়া হচ্ছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। আজকের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে। সূত্রটি জানায়, বৃহস্পতিবার জোহর থেকে দেশের মসজিদগুলো খুলে দেয়া হচ্ছে। তবে মসজিদে জামায়াতের ক্ষেত্রে শর্ত দুইজন মুসল্লির মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া দুই কাতার পর এক কাতারের জায়গা ফাকা রাখতে হবে।
https://www.youtube.com/watch?v=_2LZqIFmTp4
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post