করোনা মহামারী সংকটের মধ্যেই ওমান থেকে দেশে ফিরেছেন ২৮৮ প্রবাসী বাংলাদেশি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় তারা পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাদের মেডিকেল চেকআপ হয় পৌঁছানোর পরপরই।
সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা বলেন, ওমান সরকার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ওমান সরকার তাদের ফেরত পাঠিয়েছে তাদের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায়।
সংশ্লিষ্টরা কর্মকর্তারা বলেন, কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট আছে যাদের সঙ্গে তাদের বাসায় পাঠানো হয়েছে। আর যাদের সার্টিফিকেট নেই তাদের সশস্ত্র বাহিনী ব্যবস্থাপনায় (এএফডি) ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের এটি দ্বিতীয় ফ্লাইট। এর আগে ১৫ এপ্রিল ৩৬৬জন বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফিরে আসেন। এর আগে ওআইসির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রবাসীদের চাকরিতে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা শেষে বৃহস্পতিবার ( ২৩ এপ্রিল ) সাংবাদিকদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের ফেরত আনার বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ চাপ দিয়ে আসছিল।
বিশেষ করে বেশি চাপ দিচ্ছিল বাহরাইন, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ। প্রথম থেকেই কুয়েত হুমকি দিয়ে আসছিল, অনিয়মিত প্রবাসী কর্মীদের দেশে ফেরত না আনলে বাংলাদেশকে কালো তালিকাভুক্ত করবে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মন্ত্রণায়ের প্রতিনিধি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রভাবে এরইমধ্যে ফেরত এসেছে এক লাখের বেশি প্রবাসীকর্মী। বিভিন্ন দেশ থাকা অবৈধ কর্মীদের ফেরত আনার বিষয়ে বলা হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে কারণ অর্থনৈতিক মন্দা চলছে গুটা মধ্যপ্রাচ্যজুরে। বলা হচ্ছে তেলের দাম একেবারেই কমে যাওয়ায় এই ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। নিয়োগদাতা দেশগুলোই এখন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তবুও আমরা দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছি। হয়তো আর বেশি প্রবাসীকর্মীকে ফেরত আশা লাগবে না।”
এই পরিস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীদের সহায়তার ব্যপারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে ‘করোনা ভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কর্মীদের জন্য করণীয় বিষয়ে ৪র্থ জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্ত্রী আরও জানান, প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সামগ্রিক সুরক্ষায় সরকারের সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। একই সাথে প্রবাসীদের জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন দূতাবাসে আরও তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post