পরিবারের সুখের আশায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় কর্মরত এক রেমিট্যান্স যোদ্ধা আবু বকর (৭০)। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে একবারের জন্যও দেশে আসেননি। তিনি মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের ক্লাংয়ের একটি মলের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করেন। বছরের ৩৬৫ দিনে একদিনের জন্যও তিনি ছুটি নেননি। এবার ৩১ বছর পর দেশে ফিরছেন তিনি।
নিজেকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বর্ণনা করে আবু বকর তার উপার্জনের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে পরিবারের কাছে পাঠিয়েছেন। ক্লাং রয়্যাল সিটি কাউন্সিল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে পুরস্কৃত করেছে।
এ বিষয়ে আবু বকর জানান, বর্তমানে তার এক মেয়ে বাংলাদেশের একজন বিচারক, একজন প্রকৌশলী এবং আরেকজন ডাক্তার। সন্তানদের এই সফলতার জন্য প্রবাসে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন তিনি। আর এই উৎসর্গের প্রতিদান দিয়েছেন সন্তানেরা, এটিই তার বড় সান্ত্বনা।
তিনি বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়ায় অসার আগে শুনেছি এখানে প্রচুর কাজ। এমন কোনো কাজও যদি থাকে যা কেউ করতে চায় না, তা আমি করবো। আমি একবারের জন্যও অসুস্থতার ছুটি নেইনি। ইনশাআল্লাহ, আমি এখনও শক্তিশালী।
হিউম্যানস অব কুয়ালালামপুরের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম পেজে ওই প্রবাসী জানান, তিনি ৩১ বছর আগে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। তখন তার পঞ্চম সন্তানের বয়স ছিল মাত্র ছয় মাস। তারপর আর দেশে যাওয়া হয়নি। পরিবারকে মিস করতেন তিনি এবং তারাও তাকে মিস করত।
রেমিট্যান্স যোদ্ধা আবু বকর বলেন, ‘আমার প্রয়োজন খুবই সামান্য। উপার্জনের বেশিরভাগ অংশই পরিবারের জন্য পাঠিয়ে দিই। সকালের নাস্তা করে কাজ করতে চলে যাই, আবার ফিরে আসি। পরিবারের সঙ্গে প্রতিদিন ফোনে কথা হয়।
পরের দিন আবার একইভাবে দিন চলে যায় এই প্রবাসীর। দেশে ফিরে যাওয়ার প্রবল আগ্রহ দেখিয়ে, এ বছরের ডিসেম্বর মাসে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সদস্যদের কাছে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই নাতিকেও প্রথম দেখবেন তিনি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post