রাজধানীর ধানমন্ডি থানা এলাকাতে কিশোর আব্দুল মোতালিব হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে একাধিক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হলো।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
ধানমন্ডি থানার পুলিশ সাবেক বিচারপতি মানিককে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
জানা যায়, গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন এলাকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে যোগ দেন আব্দুল মোতালিব নামে এক কিশোর। পরে তিনি বুকে ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট নিহতের বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলার ২২নং এজাহারনামীয় আসামি মানিক।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত এ বিচারপতিকে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়।এর আগে সকালে মানিককে জামিন দেন সিলেটের একটি আদালত। জামিনের পর দেশের বিভিন্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তাকে ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেন সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাশ।
কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. ছগির মিয়া বলেন, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আদালতে একটি মামলার হাজিরা ছিল তার। তাই তাকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকার সিএমএম আদালতে তাকে এজলাসে তুলে বাড্ডা, আদাবর ও লালবাগ থানায় দায়ের করা মোট ৬টি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়।
২৫ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট থানায় পুলিশের করা একটি মামলায় তাকে জামিন দেয়া হয়। পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টার দায়ে তার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।
২৩ আগস্ট কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেফতারের আগে বা পরে মারধরের শিকার হন মানিক। অসুস্থ হয়ে পড়ায় অস্ত্রোপচারের পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে অনেকটা সুস্থ হওয়ার পর তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
২৩ আগস্ট রাতে অবৈধভাবে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বিজিবি। পরে ২৪ আগস্ট ভোরের দিকে সিলেটের কানাইঘাট দনা সীমান্ত বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে থানায় হস্তান্তর করেন। এরপর মানিককে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
ওই দিন মানিককে আদালতে নেয়ার সময় জুতা ও ডিম নিক্ষেপ করেন সাধারণ মানুষ। সাবেক বিচারপতি মানিক নিজেকে অসুস্থ দাবি করলে আদালত জেলকোড অনুসারে তাকে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর সেদিন রাতে সিলেট কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত অন্ডকোষে জরুরি অস্ত্রোপচার শেষে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একটি কেবিনে রাখা হয় তাকে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।