৫ আগস্টের পর থেকে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে বাংলাদেশ থেকে ভারতগামী ফ্লাইট। বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়ার হার কমিয়ে দেয়ায় যাত্রী খরায় ভুগছে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষতি হচ্ছে দুদেশেরই। তাই কূটনৈতিকভাবে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা উচিত।
ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে ভারতগামী ফ্লাইটগুলোর যাত্রী খরায় ভোগার মোটামুটি ধারণা মেলে পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলেই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা টু কলকাতা রুটে সপ্তাহে ১৪টির জায়গায় যাচ্ছে ৭টি ফ্লাইট। ঢাকা টু চেন্নাই রুটে সপ্তাহে চারটি কমে যাচ্ছে তিনটি। ঢাকা টু দিল্লি রুটে সপ্তাহে ৭টির জায়গায় যাচ্ছে ৪টি।
অন্যদিকে ইউএস বাংলার ঢাকা টু কলকাতা রুটে ১৪টির জায়গায় চলছে মাত্র ৬টি ফ্লাইট। ঢাকা চেন্নাইয়ের ১১টির জায়গায় সপ্তাহে ঢাকা ছেড়ে যাছে মাত্র ৫টি ফ্লাইট। যাত্রী খরায় বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম- কলকাতা রুটের ফ্লাইট। এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, এ বাস্তবতায় ভারতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যয় তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর তাই বাধ্য হয়ে কমাতে হয়েছে ফ্লাইটের সংখ্যা।
ইউএস- বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতের বিভিন্ন গন্তব্যে সর্বাধিক ফ্লাইট ছিল। ভিসা স্বল্পতার জন্য ফ্লাইট কমাতে হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ ফ্লাইট যাচ্ছে। পরিচালন ব্যয়টা আমরা কমিয়েছি। এজন্য ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছি।’
এ অবস্থার জন্য ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে ভারতের কড়াকড়িকে দায়ী করছে এয়ারলাইন্সগুলো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকায় কিছু দিন ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রাখে ভারতীয় দূতাবাস। পরে সীমিত পরিসরে চালু করা হলেও বাংলাদেশিদের দেয়া হচ্ছে শুধু চিকিৎসা ও জরুরি ভিসা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় ভিসা নীতির এই কড়াকড়িতে ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশেরই। নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আগেই কূটনৈতিকভাবে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদ-উল আলম বলেন,
এয়ারলাইন্সগুলোতে একটা প্রভাব পড়েছে। কারণ এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ রুট ছিল। শুধু আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না, তাদের এয়ারলাইন্সগুলোও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে আবার সব কিছু স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসবে বলে আশা করি। বাংলাদেশ থেকে ভারতের বিভিন্ন রুটে বর্তমানে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার এবং ভারতের ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া ও ভিস্তারা এয়ারলাইন্স।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post